কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে নিহতর ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে দায়ের করা হত্যা মামলার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
মঙ্গলবার (০৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার শহীদ মো. সরোয়ার এবং মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মনিরুজ্জামানসহ সঙ্গীয় ফোর্স।
এসময় ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজসহ গুরুত্বপূর্ণ আলামত সংগ্রহ করেন বলে নিশ্চিত করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
মামলা সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৫ আগস্ট আটজন নিহতের ঘটনায় ১০ আগস্ট থেকে অদ্যাবধি কুষ্টিয়া মডেল থানা ও আদালতে ডজনাধিক হত্যা ও হত্যাচেষ্টা অভিযোগে মামলা হয়েছে।
এসব মামলায় আওয়ামী লীগ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ রাজনৈতিক নেতাদের নাম রয়েছে। এরমধ্যে সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর গ্রামের বাসিন্দা ফেরিওয়ালা বাবলু হত্যার অভিযোগে নিহতের ছেলে বাদি হয়ে ১৯ আগস্ট আদালতে করা মামলার এজাহারে কুষ্টিয়া পুলিশের সাত কর্মকতার নাম রয়েছে।
যদিও কুষ্টিয়া মডেল থানায় পৃথকভাবে নিহত ও আহতের ঘটনায় পরিবার এবং থানায় হামলা ভাঙচুর অস্ত্র লুটসহ অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পুলিশের করা মামলা হয়েছে।
পুলিশের গুলিতে নিহত ফেরিওয়ালা বাবলু হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে আদালতে করা মামলার এজাহারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুল আলম হানিফসহ জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা ও সাত পুলিশ কর্মকর্তার নামসহ ১২৬ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ৩০/৪০ জনের বিরুদ্ধে করা মামলাটি কুষ্টিয়া অতিরিক্ত চিফ জুডিশিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মাহমুদা সুলতানা আমলে নিয়ে এক মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন।
এজাহার নামীয় সাত পুলিশ কর্মকর্তারা হলেন- কুষ্টিয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি নাথ, মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি), পুলিশ পরিদর্শক মাহফুজুল হক চৌধুরী, পুলিশ পরিদর্শক দীপেন্দ্রনাথ সিংহ, উপপুলিশ পরিদর্শক সাহেব আলী ও মোস্তাফিজুর রহমান, সহকারী উপপুলিশ পরিদর্শক আসাদুজ্জামান ও উজ্জল হোসেন।
মামলার বাদী সুজনের অভিযোগ, ঘটনাস্থলের সুনির্দিষ্ট বিবরণসহ হুকুমদাতা সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও মাহবুবুল আলম হানিফসহ রাজনৈতিক নেতারা, হত্যাকাণ্ডে জড়িত সাত পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১২৬ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ৪০/৫০ জনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে মডেল থানায় এজাহার দিলে পুলিশ তা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে কুষ্টিয়া অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতের বিচারক মাহমুদা সুলতানার আদালতে মামলাটি আমলে নেন।
এ বিষয়ে পিবিআই কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার শহীদ মো. সারোয়ার জানান, কুষ্টিয়া পিবিআইয়ের চৌকস ও দক্ষ পুলিশ পরিদর্শক মনিরুজ্জামান তদন্ত শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে বেশকিছু প্রাসঙ্গিক আলামত ও ঘটনাস্থলের প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। আদালতের দেওয়া সময়ের মধ্যেই পিবিআই একটা প্রতিবেদন দাখিল করতে সক্ষম হবেন। তারপর আদালতের যা আদেশ হয় সে মোতাবেক আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।