কুষ্টিয়ায় গড়াই নদীতে বালু তোলার সময় মুখোশধারী সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে সবুজ আলী (৪২) নামে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টার দিকে কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের কয়া বালুর ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
এ সময় তারা বালুর ঘাটের ক্যাশ কাউন্টার থেকে প্রায় দুই লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার একটা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে কুমারখালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। বর্তমানে সেখানখার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
গুলিবিদ্ধ সবুজ আলী ঢাকা মিনাপাড়া এলাকার শহীদুল বিশ্বাসের ছেলে। তিনি বালুর ঘাটের ম্যানেজার। ঘটনার পরে গুলিবিদ্ধ সবুজকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তিনি কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আহত সবুজ আলী বলেন, রাত আনুমানিক ১১টার দিকে প্রায় ৮ থেকে ১০ জন মুখোশধারী সন্ত্রাসী অস্ত্রসজ্জিত হয়ে বালুর ঘাটে আসে। তারা গুলি করতে করতে আসেন। এসময় আমার পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে। ৩ থেকে ৪ জনের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি চাই।
এ বিষয়ে বালুর ঘাটের শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শী লালু আহমেদ বলেন, আমরা বালুর ঘাটে কাজ করছিলাম। এসময় রাত ১১টার দিকে চারপাশ থেকে ভারি ভারি অস্ত্রপাতি নিয়ে গুলিবর্ষণ করতে করতে আসে ৮ থেকে ১০ জন মুখোশধারী সন্ত্রাসী। সবুজকে ধরে তার পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে। এসময় তারা প্রায় দুই লাখ টাকা লুটপাট করে নিয়ে গেছে। মুখোশধারী ৭ থেকে ৮ জনকে দেখেছি। তাদের মধ্যে তিনজনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখেছি। সবাই মুখোশধারী। কাউকে চিনতে পারিনি। তারা কারা সেটা ধারণা করতে পারছি। তবে জড়িত সবার বিচার চাই।
৪ মিনিট ৪৯ সেকেন্ডের ওই ফুটেজে দেখা যায়, মুখোশধারী তিনজন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গুলিবর্ষণ করতে করতে দৌড়ে আসেন। এতে আতঙ্কিত হয়ে ট্রাকের চালক ও বালু ঘাটের শ্রমিকরা পালিয়ে যায়। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে মুখোশধারী ৫ জনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখা যায়। তারা গুলি করতে করতে আসেন এবং গুলি করতে করতে চলে যান।
বালু অপসারণের ইজারাদার রাকিব হোসেন বলেন, সন্ত্রাসীরা ম্যানেজারের পায়ে গুলি করে প্রায় দুই লাখ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। আমরা টেন্ডারের মাধ্যমে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বালি অপসারণ কাজ পেয়েছি। বৈধভাবে আমরা ব্যবসা করছি। বৈধভাবে বালু উত্তোলন করছি, বৈধভাবে ঘাটের টেন্ডার পেয়েছি। কিন্তু সেখানে কাজ করা এক শ্রমিককে ধরে নিয়ে গেছে মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা। আমরা কাউকে চিনতে পারিনি। জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত। তিনি হাসপাতালের ১০ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ বিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলায়মান শেখ বলেন, বালুর ঘাটে মুখোশধারীদের গুলিতে একজন আহত হয়েছেন। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে পুলিশ। সেখানকার পরিস্থিতি শান্ত স্বাভাবিক রয়েছে।