কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে রশিদিয়া দরবার শরিফে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে করে ভাঙচুরের পর ওই দরবার শরিফে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
গতকাল রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে কুমারখালী উপজেলার চরসাদিপুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চরসাদিপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে এশার নামাজের পর ১৫-২০ জন নানা বয়সী মানুষ একত্রিত হন। দরবার শরিফে মাদক সেবন ও গান বাজনা হয় এমন দাবি করেন তারা। লাঠিসোঁটা নিয়ে ওই দরবার শরিফ ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সাবেক এক চেয়ারম্যান ও স্থানীয় এক মাদ্রাসা শিক্ষকের নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়েছে।
দরবার শরিফের পরিচালক জিল্লুর রহমানের ছেলে রাসেল বলেন, ‘প্রায় ১৫ বছর আগে এই খানকার শরিফ প্রতিষ্ঠা হয়েছে। দেখাশোনার দায়িত্বে আমার বাবা রয়েছেন। গ্রামের অনেকেই একত্র হয়ে এই খানকার শরিফে দোয়া মাহফিল ও গান বাজনার আয়োজন করে। তাছাড়া প্রতিবছর ওরস মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। প্রতি বছরের মতো আজও ওরস মাহফিল ছিল। রাতে দোয়া মাহফিলের মোনাজাত চলছিল। এ সময় হঠাৎ ১৫ থেকে ২০ জন লাঠিসোঁটা নিয়ে দরবার শরিফে হামলা চালিয়ে দরবারের চারচালা ঘরটি ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেয়। ভয়ে আমি, বাবাসহ উপস্থিত ভক্তরা পালিয়ে যায়। তবে কাউকে আঘাত করা হয়নি।’
রাসেল আরও বলেন, ‘এর আগে স্থানীয় মসজিদে এশার নামাজ শেষ করে হামলাকারীরা একত্র হন। এই হামলায় সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের ইন্ধন রয়েছে। তাকে ঘটনাস্থলে দেখেছি। খানকার শরিফে কোনো মাদকসেবন হয় না। এছাড়া বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এ বছর ওরসে গান বাজনার আয়োজনও ছিল না।’
নিরাপত্তার স্বার্থে এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি দরবার শরিফের পরিচালক জিল্লুর রহমান।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে চর সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দরবার শরিফের নামে সেখানে মাদকের আড্ডা চলে। সে জন্য স্থানীয় ছেলেপেলে তা ভেঙে দিয়েছে।
চর সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মেছের আলী খাঁ বলেন, ‘এ ঘটনায় আমি কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।’
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিবুল ইসলাম বলেন, ‘হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনাটি আমি জেনেছি। তবে অগ্নিসংযোগের বিষয়টি জানা নেই। চর সাদিপুর দুর্গম এলাকা হওয়ায় এখন ঘটনাস্থলে যাওয়া সম্ভব নয়। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’