একদিকে সুস্বাদু, অন্যদিকে কচি তালের শাঁসে জলীয় অংশ বেশি থাকায়, তা দেহের পানিশূন্যতা অনেকটাই পূরণ করে। ফলে জ্যৈষ্ঠের এ গরমে কুষ্টিয়ার হাট-বাজারে বেশ কদর বেড়েছে তালের শাঁসের।
ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, বি ও সিসহ নানা ধরনের পুষ্টির চাহিদাও মিটছে তালের শাঁসে। পাশাপাশি মৌসুমি ফল হিসেবে তালের শাঁস অবদান রাখছে গ্রামীণ অর্থনীতিতেও।
কালের বিবর্তনে কুষ্টিয়ার পল্লী অঞ্চলে কমে গেছে তাল গাছের সংখ্যা। তবুও বর্তমানে অনেকেই তালের আঁটি রোপণ করে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
কুষ্টিয়া শহরের এনএস রোডে তালশাঁস বিক্রি করছিলেন আরিফুল ইসলাম। তিনি কুমারখালী উপজেলার বানিয়াকান্দি এলাকার বাসিন্দা।
বছরের অন্যান্য সময় ইটভাটায় কাজ করলেও এসময়টাতে তিনি আরও একজনকে সঙ্গে নিয়ে তালের শাঁস বিক্রি করে থাকেন।
তিনি জানান, একটি তাল থেকে দু’টি বা তিনটি শাঁস থাকে। প্রতি পিস এখন তিন থেকে চার টাকায় বিক্রি হয়। গ্রামে গ্রামে ঘুরে এসব কচি তাল কিনে আনেন তিনি। তালের সংখ্যা ভেদে একটি গাছের দাম পড়ে পাঁচশ’ থেকে ১২শ’ টাকা।
প্রতিদিন দেড় হাজার টাকার তালশাঁস বিক্রি করেন তিনি। এতে পাঁচ-সাতশ’ টাকা লাভ থাকে, যা দিয়ে আরিফুল ও তার সহযোগীর সংসার মোটামুটি ভালোভাবেই চলে যায়।
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার মশান বাজারে তালের শাঁস বিক্রেতা রমজান আলী জানান, কেউ একটু তরল, আবার কেউ একটু শক্ত শাঁস পছন্দ করেন। প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ কাঁদি (ছড়া) তাল বিক্রি হয়। তালের মৌসুম এলে এ এলাকার তিনিই শুধু তাল বিক্রি করেন। যদিও এতে অনেক শ্রম দিতে হয়। গাছ থেকে তালের কাঁদি কেটে তা আবার নামানো, বাজারে বয়ে আনা, তারপর কাটাকুটি করে তবেই ক্রেতার হাতে দিতে হয়। কষ্ট হলেও বেশ লাভ হয়।
কুষ্টিয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শ্যামল কুমার বিশ্বাস বলেন, এখন বজ্রপাত রোধে বিভিন্ন রাস্তার ধারে ও খালের পাড়ে তালগাছ রোপণ করা হচ্ছে। কৃষি অফিস ও বিভিন্ন সংগঠনের আলাদাভাবে তালের গাছ রোপণ করে আসছে। এ বছর তালের ফলনটাও ভালো হয়েছে। এছাড়া এবার নতুন নতুন গাছে থেকে তাল ধরেছে। এসব গাছের তাল পাকানোর জন্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে, যাতে বীজ করা যায়।