কুষ্টিয়ায় করোনা প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলাব্যাপী কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে প্রশাসন। রবিবার বিকেলে কুষ্টিয়া জেলা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটি ভার্চুয়াল জরুরী সভা শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কুষ্টিয়া জেলা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন করোনার সময়কালীন দায়িত্বে থাকা কুষ্টিয়া জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব সুলতানা আফরোজ।
ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কুষ্টিয়ার পু্লশি সুপার (এসপি) খাইরুল আলম, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাজী রবিউল ইসলাম, সিভিল সার্জন ডাঃ আনোয়ারুল ইসলাম, এনএসআই এর যুগ্ম পরিচালক ইদ্রিস আলী, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ সদর উদ্দিন খান, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ তাপস কুমার সরকার, কুষ্টিয়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র শাহীন উদ্দিনসহ সকল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউএনওগণ।
সভায় জানানো হয়, রবিবার রাত ১২ টা থেকে কুষ্টিয়ার ৬ উপজেলা এ লকডাউনের আওতায় আসছে। পাশাপাশি জেলার সকল শিল্প কলকারখানার বন্ধ রাখা হবে বলে সভায় জানানো হয়।এছাড়াও শহরের পাশেই গড়াই নদীর হরিপুর সেতু ও ঘোড়াই ঘাটসহ গণপরিবহন এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ থাকবে। তবে কাঁচাবাজার সকাল ৭টা থেকে বেলা ১২ টা পর্যন্ত সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে এবং মসজিদে সীমিত সংখ্যক মুসল্লির উপস্থিত থাকতে পারবে বলেও সভায় জানানো হয়। কুষ্টিয়ায় প্রতিদিন হুহু করে বেড়েই চলেছে করোনা। তাই কুষ্টিয়া মেডকেল কলেজ হাসপাতালে আরেকটি পিসিআর ল্যাব ও এন্টিজেন পরীক্ষা করার ল্যাব যেন কুষ্টিয়ায় চালু হয় সেই দাবীও জানানো হয়। কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির সহসভাপতি এসএম কাদির শাকিল জানান, কাঁচাবাজার সকাল ৭টা থেকে বেলা ১২ টা পর্যন্ত সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে কুষ্টিয়া ইসলামী কলেজ মাঠ এবং পাবলিক লাইব্রেরী মাঠে বসানো হবে।
তবে কুষ্টিয়া ইসলামী কলেজ মাঠে বর্ষনের কারনে পানি জমে থাকায় তা নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চত করতে পৌর মেয়রকে অনেুরোধ করেন। যাতে করে সেখানে অন্তত কাঁচা বাজার বসানোর ব্যবস্থা করা যায়।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা: তাপস কুমার সরকার জানান, করোনা রোগী ও সংক্রমণ ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধির কারণে কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা হাসপাতালটি করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল ঘোষণাসহ চিকিৎসক, জনবল ও চিকিৎসা সরঞ্জাম বৃদ্ধির জন্য রবিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালককে হাসপাতালের তত্ববধায়ক ডাক্তার আব্দুল মোমেন চিঠি দিয়েছেন। এদিকে এ হাসপাতালে ননকোভিড রোগী ভর্তি ও চিকিৎসা সংকুচিত করে ডায়াবেটিক হাসপাতালে বিকল্প ব্যবস্থায় চিকিৎসার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। হাসপাতালে প্রতিদিনই রোগী সংখ্যা বাড়ছে।
গত শনিবার রাতে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবরেটরির প্রাপ্ত রিপোর্টে ১৬৪ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এরআগে শুক্রবার রাতে ১১২ জন ও বৃহস্পতিবার ১৫৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।