কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে গত ২৪ ঘণ্টায় ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তারা সবাই করোনা পজিটিভ ছিলেন। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত একজন মারা যান।
গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় নতুন করে ১১২ রোগী শনাক্ত হয়েছে। একদিনে পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার প্রায় ৩২ শতাংশ।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ তাপস কুমার সরকার বলেন, শুক্রবার রাতে ৭ জন মারা গেছে। আর শনিবার সকালে মারা যান একজন। এটিই এ হাসপাতাল তথা জেলায় একদিনে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু।
এদিকে, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ১০০ শয্যার বিপরীতে বর্তমানে ১১৩ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। ওয়ার্ডে নতুন করে আর কোনো রোগী ভর্তির সুযোগ নেই। এ পরিস্থিতিতে হাসপাতাল থেকে ৩০ জন সাধারণ রোগীকে পাশের মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ডায়াবেটিস হাসপাতালে স্থানাস্তর করেছে কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালে দেখা দিয়েছে অক্সিজেন সংকট। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো থেকে যেসব রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে, সেসব রোগীর প্রত্যেকেরই অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে।
এ পরিস্থিতিতে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি গত ১১ জুন মধ্যরাত থেকে অধিক সংক্রমিত কুষ্টিয়া পৌর এলাকায় ৭ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে। তবে এই বিধিনিষেধ অনেকটা কাগজেকলমেই সীমাবদ্ধ ছিল। মাঠ পর্যায়ে তা খুব একটা কার্যকর হতে দেখা যায়নি।
শুক্রবার ওই বিধিনিষেধের মেয়াদ শেষ হলে নতুন করে আরও ৭ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ জারি করে করোনা প্রতিরোধ কমিটি। তবে শনিবার সকাল থেকে এই বিধিনিষেধ কার্যকর করতে প্রশাসনের ব্যাপক তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে।
ঈদের পর থেকে কুষ্টিয়ায় করোনা সংক্রমণের মাত্রা কিছুতেই বাগে আনা যাচ্ছে না, ক্রমশ বেড়েই চলেছে। শুক্রবারও আক্রান্তের সংখ্যা শতাধিক ছাড়িয়েছে।
শুক্রবার কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পিসিআর ল্যাবে মোট ৩৬৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ১১২টি নমুনা পজিটিভ আসে। পরীক্ষার বিপরীতে আক্রান্তের হার প্রায় ৩২ শতাংশ। নতুন শনাক্ত হওয়ার রোগীর মধ্যে সদর উপজেলার সর্বোচ্চ ৭৫ জন, কুমারখালী উপজেলার ১৬ জন, মিরপুর উপজেলার ৪ জন, দৌলতপুরের ৫ জন, খোকসা উপজেলার ৪ জন ও ভেড়ামারা উপজেলার ৮ জন।
এই নিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৬১৭৫ জন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪ হাজার ৯৬৯ জন। এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১৪৮ জন।