কুষ্টিয়ায় লকডাউনের মধ্যেও লাগামহীন করোনা সংক্রমন। জেলায় এতদিনে আরো ৫ জন করোনা রোগি মারা গেছেন। এ নিয়ে জেলায় গত ৪দিনে ২৫ জন মানুষ করোনায় মারা গেলেন। গত সোমবার রাত ৮টা থেকে গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১০টার পর্যন্ত কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান।
এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় নতুন করে আরো ১১৯ জন রোগি সনাক্ত হয়েছে। গত সোমবার রাতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রেস রিলিজ অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় জেলায় ৩২৩টি নমুনা পরীক্ষা করে ১২২ জন রোগি সনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষার বিপরিতে সনাক্তের হার প্রায় ৩৭ শতাংশ। নতুন রোগীর মধ্যে সদর উপজেলায় সর্বোচ্চ ৩৯ জন, কুমারখালী উপজেলায় ২৫ জন, মিরপুর উপজেলায় ২০ জন, দৌলতপুরে ১৪ জন, খোকসা উপজেলায় ১২ জন ও ভেড়ামারা উপজেলায় ৯ জন রোগী সনাক্ত হয়েছে।
এনিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৬৪২২ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪৯৮৫ জন মানুষ। এখন পর্যন্ত মারা গেছেন জন ১৬৬ জন মানুষ। নতুন শনাক্ত হওয়ার রোগীর মধ্যে সদর উপজেলায় সর্বোচ্চ ৮৩ জন, কুমারখালী উপজেলায় ৮ জন, মিরপুর উপজেলায় ১৪ জন, দৌলতপুরে ৫ জন, খোকসা উপজেলায় ১০ জন ও ভেড়ামারা উপজেলায় ৮ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৬৪২২ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫০৬১ জন মানুষ। এখন পর্যন্ত মারা গেছেন জন ১৬২ জন মানুষ।
এদিকে, গত ১০ দিনে জেলায় ১০৪১ জন করোনা রোগি সনাক্ত হয়েছে। ২৫০ শয্যার কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে রোগি সামলাতে হিমসিম খাচ্ছেন ডাক্তার ও নার্সরা। এ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যা ১০০ হলেও বর্তমানে ভর্তি আছে ১৪৭ জন রোগি। এদিকে, রোগির চাপ সামলাতে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তাপস কুমার সরকার জানান, জেলায় রোগির করোনা রোগির সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে তাতে মারাত্মক চিকিৎসা সংকট তৈরী হতে পারে। এ কারণে কুষ্টিয়া জেনারেল কেবলমাত্র করোনা রোগি ভর্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ হাসপাতালতে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা হওয়ায় কেবল করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। অন্য রোগীদের জন্য ডায়াবেটিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে।
শুধুমাত্র জরুরি রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে এখানে। এদিকে, উদ্ভুত পরিস্থিতিতে দুই দফার কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের পর গতকাল সোমবার থেকে জেলায় সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এতে বন্ধ রয়েছে সব ধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। নিত্য প্রয়োজনীয় দব্যের দোকান চালু থাকছে সকাল ৭টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলম জানান, লকডাউনে লোক সমাগম ঠেকাতে পুলিশ শহরে প্রবেশের ৮টি পথে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। জেলা শহর ছাড়াও উপজেলা পর্যায়েও লকডাউন কার্যকরে তৎপরতা চালাচ্ছে প্রশাসন।