কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে জমাজমি সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের জের ধরে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের দায়ে আপন পাঁচ ভাইকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সাথে অর্থদণ্ডেরও আদেশ দেন আদালত।
সোমবার দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ অতিরিক্ত আদালত-১এর বিচারক তাজুল ইসলাম জনাকীর্ণ আদালতে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের দুজনের উপস্থিতিতে এই রায় দেন। রায়ে প্রত্যেককে পৃথকভাবে ২৫হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর সাজার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, কুমারখালী উপজেলার মাঝগ্রামের বাসিন্দা মৃত রহমত সেখের ছেলে উজ্জল হোসেন(৪৭), জালাল উদ্দিন (৫৬), সেজ্জাত ওরফে সুজাত(৪৩), আব্দুল গফুর (৬৭) এবং সুজন হোসেন (৩৮)।
আদালতের মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালের ১১জুন রাত সাড়ে ১০টায় কুমারখালী উপজেলার খোদ্দবন গ্রামের আলিমদ্দিন সেখের ছেলে জামাল উদ্দিন সেখ নিজ ধানক্ষেতে সেচ দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে আসামিরা পূর্ব শত্রুতার জেরে সংঘবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তারা জামাল উদ্দিন সেখকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। এতে জামাল উদ্দিন ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই আফিল উদ্দিন সেখ বাদী হয়ে আটজনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন কুমারখালী থানায়।
মামলাটি তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ০৭ জানুয়ারি ১২জনের বিরুদ্ধে কৃষক জামাল উদ্দিন হত্যায় জড়িত অভিযোগ এনে আদালতের চার্জশীট দাখিল করেন কুমারখালী থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক সামছুল আলম সিদ্দিকী।
কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি এ্যাড. অনুপ কুমার নন্দী জানান, কুমারখালী থানার জমি সংক্রান্ত দ্বন্দের জেরে প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জামাল উদ্দিন নামের কৃষককে হত্যার দায়ে আপন পাঁচ সহোদরের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীত প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ২৫হাজার টাকা অর্থদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। জরিমানার টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে আরও এক বছর সাজা খাটতে হবে তাদের। সেইসঙ্গে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলায় মজনু, বিল্লাল, মো. হেলাল, জলিম উদ্দিন, সাকাই, দুলাল এবং আব্দুর রহিমকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।