সীমান্তবর্তী জেলা কুষ্টিয়ায় আশঙ্কাজনক হারে বেড়েই চলেছে করোনা সংক্রমণ। বাড়ছেই মৃত্যর মিছিল। কোনভাবেই কমানো যাচ্ছে না। এ পর্যন্ত জেলায় মৃত্যুর সংখ্যা তিনশো ছাড়িয়েছে বলে জানা গেছে।
শুক্রবার (৯ জুলাই) হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবদুল মোমেন জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ১২ জন করোনা পজিটিভ এবং ১০ জনের দেহে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে। এনিয়ে জেলায় মোট ৩১০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন।
তিনি বলেন, তবে সচেতন হলে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব। গ্রামের মানুষকে বেশি সচেতন হতে হবে। কেননা, ভর্তি রোগীর বেশির ভাগই গ্রাম থেকে আসছে। মারা যাওয়া রোগীদের মধ্যেও গ্রামেরই বেশি।
তিনি আরও জানান, ২শ বেডের কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে বর্তমানে করোনা পজিটিভ ও করোনার উপসর্গ নিয়ে মোট ২৮০ জন ভর্তি রয়েছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানা যায়, জেলায় গত ২৯ মে থেকে ২৯ জুন পর্যন্ত এক মাসে করোনায় মারা গেছেন ৯০ জন। এর আগের ১৪ মাসে মারা গেছেন ১১২ জন। আর সর্বশেষ মাত্র ১০ দিনে মারা গেছেন ১০৮ জন।
কুষ্টিয়া করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তাপস কুমার সরকার জানান, জেলার সর্বত্র করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট জনিত কারণে এমনটা হচ্ছে। শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে এখন করোনার প্রকোপ বেশি। গ্রামের মানুষের মধ্যে সচেতনতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রবণতা খুব কম। করোনার উপসর্গ নিয়ে দেরিতে চিকিৎসা নিতে আসা এবং দীর্ঘদিন বিভিন্ন জটিল রোগে ভোগার কারণে ৫০ বয়সোর্ধ্বদের মৃত্যু বেশি হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
সিভিল সার্জন ডা: এএইচএম আনোয়ারুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৯২টি নমুনা পরীক্ষায় ২২০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলায় হোম আইসোলেশনে ছিলেন তিনি হাজার ৩৪ জন। গতকাল ছিলেন দুই হাজার ৯৫৬ জন। আগের দিন ছিলেন দুই হাজার ৮৭৫ জন। বর্তমানে স্বাস্থ্য বিভাগের তালিকায় জেলাতে মোট আক্রান্ত আছেন তিন হাজার ৩১৩ জন। তার আগের দিন ছিলেন তিন হাজার ২২১ জন। কুষ্টিয়ায় এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন নয় হাজার ৮৮৪ জন।