কুষ্টিয়ায় বিভাগীয় পর্যায়ে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক জনসচেতনতামূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ সোমবার (৩ জুন) সকালে কুষ্টিয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এ কর্মশালার আয়োজন করে।
এ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ সদর আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব-উল আলম হানিফ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের প্রতিটি লক্ষ্যের সঙ্গেও নিরাপদ খাদ্য গভীরভাবে জড়িত। কিন্তু এসডিজি অর্জনের অন্তরায় অনিরাপদ খাদ্য। তাই নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত পারলেই উন্নয়ন টেকসই হবে।
তিনি বলেন, আইন কিংবা চাপ দিয়ে খাদ্যে ভেজাল নির্মূল করা কঠিন। এ জন্য প্রয়োজন নিরাপদ খাদ্য পেতে জনসচেতনতামূলক বার্তা ছড়িয়ে দিতে হবে সবার মাঝে, যাতে নিরাপদ খাদ্যের মৌলিক অধিকারের দাবি সামাজিক আন্দোলনে রূপ নেয়।
কুষ্টিয়া চাউল ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, চাউল যেভাবে পালিশ করা হয় তাতে চালের গুনাগুন ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। চাল পালিশের পরে শুধুমাত্র আমরা কার্বোহাইড পাচ্ছি। এসব থেকে চাল ব্যবসায়ীদের বেরিয়ে আসতে হবে। ভোক্তার দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। এমপি বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিনি নিরাপদ খাদ্যের বিষয়টি অনুধাবন করে স্কুল লেভেলের পাঠ্যপুস্তকেও নিরাপদ খাদ্যের বিষয়টিঅন্তর্ভুক্ত করেছেন।
স্বাস্থ্যই সকল সুখের মুল উল্লেখ করে হানিফ আরও বলেন, স্বাস্থ্যই জীবনের সকল সুখের মূল।
স্বাস্থ্যবান জাতি গঠনে নিরাপদ খাদ্যের কোনও বিকল্প নেই। কারণ একটি জাতি শুধু অর্থনীতির মানদণ্ডে উন্নত জাতিতে পরিণত হয় না। সেখানে নিরাপদ খাবার এবং সুস্বাস্থ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক। টেকসই উন্নয়নের জন্য তাই সবার জন্য নিরাপদ খাবারের সংস্থান করতে হবে।
তাই নিজেকে সুস্থ থাকতে হলে ভালো খাবারের পাশাপাশি শরীর চর্চাতেও বিশেষ দৃষ্টি দেওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) জাকারিয়ার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব রেজাউল হক চৌধুরী, কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কামারুল আরেফীন, কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনের সংসদ সদস্য আব্দুর রউফ, জেলা প্রশাসক মোধ এহেতেশাম রেজা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক জোবায়ের, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সদর উদ্দিন খান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রকল্প পরিচালক আবু নুর মো: শাসুজ্জামান।
জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার সজীব পাল পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন এর মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য সংক্রান্ত তথ্যাবলি উপস্থাপন করেন। তিনি উপস্থিত সকলের মাধ্যমে কুষ্টিয়াবাসীর মাঝে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির আহবান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) জাকারিয়া বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে দরকার আন্তঃসংস্থা সমন্বয়। খাদ্যব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকারের অনেকগুলো সংস্থা কোনো না কোনোভাবে জড়িত। সবগুলো সংস্থাকে এক টেবিলে বসিয়ে কোনো বিষয়ে রাজি করানো খুব জটিল ও সময়সাপেক্ষ কাজ। তাই ধীরে ধীরে সবার সহযোগিতার মাধ্যমে দেশে নিরাপদ খাদ্যের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প আয়োজিত এ কর্মশালায় জনপ্রতিনিধি, হোটেল-রেস্তোরা ব্যবসায়ী, খাদ্য ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধি, গণমাধ্যম কর্মী ও সরকারি কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।
এরআগে ‘পত্রিকা খুললেই লুটপাটের খবর, সরকার হাজার হাজার আজিজ-বেনজীর তৈরী করেছে’ বিএনপির এমন অভিযোগ সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, সরকার কোন দূর্ণীতিবাজকে পৃষ্টপোষকতা করছে না। আমাদের সরকার দুর্ণীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষনা করে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করছে।
দুর্নীতির জন্য সরকারকে ঢালাও ভাবে অভিযোগ করার কোন সুযোগ নেই। রাষ্ট্রের উচ্চ বা নিম্ন পর্যায়ের সরকারী কর্মকর্তা বা কোন ব্যাক্তি যদি অনিয়ম দুর্নীতি করেন তবে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রথম কাজ হচ্ছে তাদের সমন্ধে সঠিক তথ্য সরকারকে দেওয়া। এক্ষেত্রে গোয়েন্দাদের ব্যর্থতা হিসেবে চিন্নিত হবে।
আর বিএনপির উদ্দ্যেশে হানিফ বলেন, বিএনপির দুই শীর্ষ নেতা বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দূর্ণীতি, অর্থপাচার, অর্থ কেলেকারীর দায়ে অভিযুক্ত হয়ে আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছে, সেই দলের নেতাদের মুখে দূর্ণীতির বিরুদ্ধে কথা বলা মানায় না।
দ্রব্যমল্যে বৃদ্ধি প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, সারাবিশ্বেই দব্যমূল্যের দাম বেড়েছে। বাংলাদেশেও তার প্রভাব পড়েছে। দব্যমূল্য বাড়লে সবারই কস্ট হয়। তাই সরকার যতটুকু সম্ভব এটা নিয়ন্ত্রনের চেস্টা করে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।