ঈদের মত মহোৎসবে সেমাইয়ের যেন বিকল্প নেই। দেশের বিভিন্ন স্থানে সেমাই তৈরি হলেও কুষ্টিয়া এর জন্য সুখ্যাত। আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে তাই মহাব্যস্ত স্থানীয় সেমাই কারখানাগুলোর শ্রমিকরা।
কুষ্টিয়ার বিভিন্ন সেমাই কারখানা ঘুরে দেখা গেছে, ময়দা মাখানো, মেশিনের মাধ্যমে মিশ্রণ তৈরি করা, অতঃপর সেমাই তৈরি করে রোদে শুকানোর কাজে ব্যস্ত শ্রমিকরা। ঈদ যতই কাছে আসছে, তাদের ব্যস্ততা যেন ততই বাড়ছে। সময়মত সেমাই সরবরাহ করতে হবে তাদের।
কুষ্টিয়ার সাদা সেমাইয়ের ব্যাপক চাহিদা থাকায় বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হয়। রমজান মাস যত শেষ হয়ে যাচ্ছে ততই এই সেমাই বিক্রির পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। সেমাই বেচাকেনা নিয়ে পাইকারি ব্যবসায়ীরাও আড়তে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
কুষ্টিয়ার বিখ্যাত সাদা সেমাই ঈদ উপলক্ষে বিপুল পরিমাণে উৎপাদিত হচ্ছে। দম ফেলানোর যেন ফুরসত নেই শ্রমিকদের। উন্নতমানের সেমাই তৈরির চ্যালেঞ্জ রয়েছে তাদের।
তবে, অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে সেমাই তৈরির অভিযোগ আছে অনেক কারখানার বিরুদ্ধে। এমনকি বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) অনুমোদন না থাকারও অভিযোগ পাওয়া গেছে অনেকগুলো কারখানার বিরুদ্ধে।
জেলাটিতে ১৭টি সেমাই কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় কোনো কেমিক্যাল ব্যবহার না করেই স্বাস্থ্যসম্মতভাবে সেমাই তৈরি করা হচ্ছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
তবে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শহরের অলিগলিতে অস্থায়ী কারখানায় দিনরাত চলছে সেমাই তৈরির কাজ। বেশি মুনাফার আশায় নোংরা ও অপরিষ্কার কারখানায় কারিগররাও অপরিচ্ছন্নভাবে কাজ করছেন। তাছাড়া খোলা স্থানে শুকানো হচ্ছে সেমাই। যেখানে কাক বা অন্য পাখির অবাধ বিচরণ রয়েছে।
কুষ্টিয়া খাদ্য শিল্প মালিক সমিতির সাধারণ বিল্লাল হোসেন বলেন, জেলার চাহিদা মিটিয়ে এখানকার সেমাই আশপাশের জেলাগুলোতেও সরবরাহ করা হয়ে থাকে। প্রতিদিন দুই থেকে তিনশ’ মণ সেমাই উৎপাদন করা হচ্ছে। এখন আবহাওয়া ভালো থাকলেও মাঝে মাঝে বৃষ্টির কারণে উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। এদিকে কুষ্টিয়ার সেমাই কারখানাগুলোতে নোংরা অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের মধ্যে তৈরি সেমাই কতটা স্বাস্থ্যসম্মত সেটাই দেখার বিষয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম জানান, পবিত্র রমজান উপলক্ষ্যে যাতে জেলার কোথাও ভেজাল খাদ্য বিক্রি বা দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতি না হয় সে দিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নজরদারী করা হচ্ছে। সেমাই কারখানাগুলোতে শীঘ্রই অভিযান শুরু হবে।