কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে মধ্যরাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে শারীরিক নির্যাতনের পর ভ্রাম্যমাণ আদালতের সাজা দেয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত ডিসির বিষয়ে দুপুরের পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এমনটি জানিয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, রংপুর বিভাগীয় প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দুপুরের পর কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোছা. সুলতানা পারভীনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
আরিফকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে দণ্ড দেয়া নিয়ে তোলপাড়ের মধ্যে রোববার সকালে গণমাধ্যমকে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।
শুক্রবার মধ্যরাতে কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে বাড়ি থেকে তুলে আনেন জেলা প্রশাসকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমার নেতৃত্বে কয়েকজন ম্যাজিস্ট্রেট। তাকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, মাদকবিরোধী অভিযানে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার কাছ থেকে ৪৫০ গ্রাম দেশি মদ ও ১০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে।
তবে সাংবাদিক আরিফের স্ত্রী মোস্তারিমা সরদারের অভিযোগ, শুক্রবার রাত ১২টার দিকে একদল লোক দরজা ভেঙে হুড়মুড় করে ঘরে ঢুকে ‘তুই খুব জ্বালাচ্ছিস’ বলে আরিফুলকে পেটাতে থাকে। এ সময় তাকেও গালাগাল করা হয়। একপর্যায়ে কয়েকজন মিলে টেনেহিঁচড়ে আরিফকে তুলে নিয়ে যায়। তাকে জামাও পরতে দেয়া হয়নি। সকালে তিনি জানতে পারেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে আরেক দফা মারধরের পর সাজানো অভিযোগে আরিফুলকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরে শনিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রংপুর বিভাগীয় কমিশনারকে ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়। রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার কেএম তারিকুল ইসলাম তদন্তের দায়িত্ব দেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) আবু তাহের মো. মাসুদ রানাকে।
এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিভাগীয় প্রতিবেদনটা আমাদের কাছে আসবে। সেটি যাচাই করে একটি সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। একটা পদক্ষেপ আমরা নেব। দুপুরের পর হয়তো যে সিদ্ধান্ত নেয়ার আমরা নিতে পারব।
তিনি বলেন, লিখিত প্রতিবেদনটা গতকাল রাতেই ঢাকায় চলে আসার কথা, না এলেও হয়তো সকাল সকাল চলে আসবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিক আরিফকে তুলে আনা কিংবা সাজা দেয়ার ক্ষেত্রে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটে থাকলে বিষয়গুলো জাস্ট দেখে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।
স্থানীয়রা জানান, কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন একটি পুকুর সংস্কার করে নিজের নামে নামকরণ করতে চেয়েছিলেন। এ বিষয়ে নিউজ করার পর থেকেই ডিসি আরিফের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন।
সুত্র-যুগান্তর