অল্প খরচে কৃষিজাত পণ্য পরিবহণে বাংলাদেশ রেলওয়েতে এবার সংযোজন করা হবে অত্যাধুনিক ১২৫টি লাগেজ ভ্যান। এরমধ্যে ৭৫টি মিটারগেজ ও ৫০টি ব্রডগেজ লাগেজ ভ্যান।
এ উপলক্ষে গতকাল শনিবার বিকাল ৫টায় চুয়াডাঙ্গা জীবননগর উপজেলার উথলী রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন মাঠে অংশীজন সভায় এ তথ্য জানান বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মোহাম্মদ শামছুজ্জামান। তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়েতে ৪১টি মিটারগেজ ও ১০টি ব্রডগেজ লাগেজ ভ্যান রয়েছে। এর বেশির ভাগই তাদের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল পেরিয়ে গেছে। তাই এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে বাংলাদেশ রেলওয়ের রোলিং স্টক অপারেশন উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নতুন করে অত্যাধুনিক ৭৫টি মিটারগেজ ও ৫০টি ব্রডগেজ লাগেজ ভ্যান সংযোজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
সে অনুযায়ী গত বছরের ৩১ আগষ্ট, বাংলাদেশ রেলওয়ে ও গণচীনের যৌথ কোম্পানি CNTIC-RAILTECO-JINXI এরমধ্যে ওই লাগেজ ভ্যান সংগ্রহের দুটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। আগামী ২০২২ সালের জুলাই থেকে এ সকল লাগেজ ভ্যান বাংলাদেশে পৌঁছানো শুরু হবে। তিনি আরও জানান, ৭৫ টি মিটারগেজ লাগেজ ভ্যানের মধ্যে ৩০ টি ও ৫০টি ব্রডগেজ লাগেজ ভ্যানের মধ্যে ৩০টি জেনারেল লাগেজ ভ্যানে সবুজ শাক সবজিসহ মৌসুমি ফল ও ফুল পরিবহণের জন্য ব্যবহার করা হবে।
এছাড়া ৭৫ টি মিটারগেজ লাগেজ ভ্যানের মধ্যে ১৬ টি ও ৫০টি ব্রডগেজ লাগেজ ভ্যানের মধ্যে ১২টি রেফ্রিজারেটেড লাগেজ ভ্যানে পচনশীল দ্রব্য (মাছ, মাংস, দুধ) পরিবহণের জন্য ব্যবহার করা হবে। এতে কৃষকরা অল্প খরচে তাদের কৃষিপণ্য ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিবহণ করতে পারবে। বাংলাদেশ রেলওয়ে পাকশী বিভাগ আয়োজিত ওই অংশীজন সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগার টগর। তিনি বলেন, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর অঞ্চলে অনেক শাক সবজি ও ফলমূল উৎপাদন হয়।
কৃষকরা খুব অল্প খরচে কম সময়ে তাদের উৎপাদিত পণ্য ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিবহণ করতে পারবেন। এখন যমুনা সেতু হয়ে এসব কৃষি পণ্য পরিবহণ করা হচ্ছে। কিন্তু পদ্মা সেতু পুরোপুরি চালু হলে এ অঞ্চলের কৃষি পণ্য ওই সেতু দিয়েই খুব কম সময়ে রাজধানীতে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে রাজশাহী পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মিহির কান্তি গুহের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মোহাম্মদ শামছুজ্জামান। সভায় অন্যান্যের মধ্যে জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মুনিম লিংকন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবু মো. আব্দুল লতিফ অমল, জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম, বাংলাদেশ পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর চীফ কমান্ডেন্ট আশরাফুল হকসহ রেলওয়ের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, খুলনা-দর্শনা রেলপথ সিঙ্গেল লাইন থেকে ডাবল লাইনে উন্নীতকরণ, আন্তঃনগর ট্রেনের স্টপেজসহ ৬ দফা দাবি রেলওয়ে মহাপরিচালকের কাছে পেশ করে উথলী বাজার কমিটি।