উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আলোচনাকালে আলী আজগার টগর এমপি বলেছেন, চিনি শিল্পের মেরুদন্ড ভেঙে পরছিলো। চরম বিপর্যয়ের মুখে ছিলো দেশের চিনি শিল্প। এ বিপর্যয় থেকে চিনি শিল্পকে বাচাতে সরকার গ্রহণ করেছে নানামুখি পদক্ষেপ।
রুগ্ন শিল্পকে রক্ষায় শ্রমিক-কর্মচারি ও আখচাষিদের সুবিধার্থে যে সাশ্রয় নিতি গ্রহন করা হয়েছে তা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ মিলের লোকসানের বোঝা কমাতে শ্রমিক-কর্মচারি ও কর্মকর্তাদের আরো দক্ষ, কর্মঠ্য, দূরদর্শিতা, নিষ্টা ও আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে হবে।
আখচাষিরাই মিলের প্রাণ। গতকাল শুক্রবার বিকালে আখমাড়ায় উদ্বোধন কালে তিনি এ সব কথা বলেন।
এমপি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানে কেরুজ চিনিকলকে মডেল হিসেবে তুলে ধরা হবে গোটা দেশে। কেরুজ চিনিকলকে আধুনিকায়ন করতে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন কর্মসূচিহাতে নিয়েছে। চাষিদের কথা চিন্তা করে ইতিমধ্যেই কয়েক দফায় আখের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে।
আখচাষিদের ভোগান্তি লাঘবে আধুনিক পদ্ধতিতে মোবাইল ম্যাসেজের মাধ্যমে যেমন পুজি দেয়া হচ্ছে, তেমনি ঘরে বসেই আখের মূল্য পাচ্ছে কৃষকরা। যুগযুগ ধরে চাষিকূল আমাদের অর্থনৈতিক বুনিয়াদকে সমৃদ্ধ করেছে। কৃষি বান্ধব এ সরকার কৃষকের সকল সুবিধা নিশ্চিত করতে হাতে নিয়েছে বিভিন্ন কর্মসূচি।
গত বছর লোকসান গুনলেও এবার লাভের আশা নিয়ে আখ মাড়াইয়ের যাত্রা শুরু করলো চিনিকল কর্তৃপক্ষ।
কেরুজ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহেদ আলী আনছারীর সভাপতিত্বে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কেরুজ শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি তৈয়ব আলী।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সকার কর্পোরেশনের চিফ ইঞ্জিনিয়ার এনায়েত হোসেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাবেক চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়াদ্দার টোটন, দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলী মুনসুর বাবু, দর্শনা তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মাহাবুব রহমান, দামুড়হুদা উপজেলা
আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল আলম ঝন্টু , কেরুজ চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক (অর্থ) মোশারফ হোসেন, জি এম প্রশাসন দিলিপ কুমার , ডিজিএম (ফার্ম) হুমায়ূন কবির, ডিজিএম (বীজ এগ্রো) উত্তম কুমার কুন্ড, ডিজিএম (স¤প্রসারণ) হাজী আনোয়ার হোসেন, ডিষ্টিলারি (বিক্রয়) শেখ সাহাবুদ্দিন, শাহদত হোসেন, আব্দুল ফাত্তাহ, বদরুল আলম, রাজিবুল হাসান , সহসভাপতি ফারুক আহম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান মাসুদ, যুগ্নসম্পাদক খবির উদ্দিন, সাবেক সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম প্রিন্স, শ্রমিক নেতা ফিরোজ আহমেদ সবুজ, মোস্তাফিজুর রহমান, প্রমুখ।
গিয়াস উদ্দিনের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত সভা শেষে দোয়া পরিচালনা করেন, কেরুজ জামে মসজিদের পেশ ইমাম হাজি আব্দুল খালেক।
পরে ২০১৮-১৯ আখ মাড়াই মৌসুমে সর্বোচ্চ আখ চাষের স্মারক তুলে দেন দর্শনা পৌর এলাকার কেরুজ ২ নং ইউনিটের আখ চাষী কেরুজ শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি তৈয়ব আলী, কেরুজ মিলগেট (পশ্চিম) এর পরানপুর গ্রামের আখচাষী ইনতাজুল ও মিলগেট পূর্ব আখচাষী আওয়াল হোসেনের হাতে। এ মৌসুমে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশেনের বেধে দেয়া নির্ধারিত লক্ষমাত্রার মধ্যে রয়েছে।
চিনিকল সুত্রে জানা গেছে এ মৌসুমে ৭.৬% শতাংশ চিনি আহরনের গড়হার ধরে ৯০ কার্যদিবসে, ১ লাখ ৭ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৭ হাজার মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ বছর চিনি কলের নিজস্ব জমিতে ১ হাজার ৬৪০ একর সহ মোট ৭ হাজার ৩৭৫ একর জমিতে দÐায়মান আখ রয়েছে।
তবে ধারণা করা হচ্ছে আখ মাড়াইয়ের ক্ষেত্রে লক্ষমাত্রা অর্জন হতেও পারে। চলতি মৌসুমে ৮০ বছরের পুরোনো মিলটি বড় ধরণের যান্ত্রিক ত্রæটির কবলে না পরলে লোকসান থাকবে না বলে আশাবাদি কতৃপক্ষ।
চিনিকলের ক্যান কেরিয়ার চত্তরে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত আলোচনাসভা ও দোয়া মাহফিলের পরপরই ডোঙায় আখ নিক্ষেপের মধ্যদিয়ে মাড়াই যাত্রার উদ্বোধন করলেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজী আলী আজগার টগর (এমপি) সহ মিল কতৃপক্ষ।
-দর্শনা প্রতিনিধি