লুট করা টাকা ফেরত ও হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী মৎস্যজীবিরা। গতকাল শনিবার বিকাল ৫ টার সময় জগদীশপুর হালদার পাড়ার বাওড়ের তীরে এ মানববন্ধন করেন তারা।
জানা যায়, কোটচাঁদপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি বিল, বাওড় রয়েছে। যার মধ্যে জগদীশপুর বাওড় অন্যতম। এ বাওড় ঘিরে বসবাস করেন ৫৩ ঘর মৎস্যজীবি। যারা এ বাওড়ের মৎস্য আহরন করে জীবিকা চালায়।
তবে এ বাওড় চাষ করতে গিয়ে তাদেরও পোহাতে হয় অনেক ধরনের ঝামেলা। শুক্রবার রাতের ঘটে যাওয়া ঘটনা তাঁর বহিঃপ্রকাশ। এ ঘটনা নিয়ে এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ সব থেকে রেহাই পেতে শনিবার জগদীশ বাওড়ের তীরে মানববন্ধন করেন। এ সময় মৎস্যজীবি সম্প্রদায়ের প্রায় ২ শতাধিক নারী পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে বক্তব্যে ভুক্তভোগী মৎস্যজীবি ও সমিতির সভাপতি নারায়ন মন্ডল বলেন, কোটচাঁদপুর উপজেলার সব থেকে পুরাতন সমিতি আমাদের। এ সমিতির আওতায় আমরা এ বাওড়ে মাছ চাষ করে থাকি।
এবারও ২০২১ সালের দিকে বাওড়ের ডাক পায় ওই সমিতি। এরপর থেকে সমিতির সাধারন সম্পাদক কানাই হালদার একটা গ্রুপ করে আমাকে বাদ দিয়ে মাছ করছিল। চাষে ১৪ লাখ টাকা লোকসান দেখান তারা।
এ সব বিষয় নিয়ে শুক্রবার মিটিংয়ে বসা হয় স্থানীয় পুজা মন্ডপে। এ সময় রাজিবুল, মোহাম্মদ আলীসহ কয়েক মটরসাইকেল করে ঘটনাস্থলে আসেন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে। ওই সব দেখে মিটিং থেকে সবাই দৌড়ে পালায়।
এ সময় মিটিং স্থলে থাকা সমিতির প্রায় ১২ লাখ টাকা নিয়ে যায় তারা। তিনি বলেন, মোহাম্মদ আলী আমাদের কাছে মাছের পোনার টাকা পেত। ওই টাকা দেওয়ার কথা ছিল বৃহস্পতিবার।
তবে ওই দিন মিটিং না হওয়ায় টাকা দেয়া সম্ভব হয়নি। নারায়ণ মন্ডল বলেন, আমরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ। বাওড়টি চাষ করে আমাদের জীবিকা চলে। আর তাতে বাদ সাধে ওই গ্রুপের লোকজন। আমরা তাদের হাত থেকে রেহাই পেতে চাই। এ বিষয়ে সকালে কোটচাঁদপুর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযুক্ত রাজিবুল ইসলাম বলেন, নারায়ন মন্ডল বিএনপি করে। এ কারনে চেয়ারম্যানের নির্দেশে তাকে বাওড়ের তীরে যাওয়া নিষেধ ছিল। বাওড়টি চাষ করছিল সমিতির সাধারণ সম্পাদক কানাই হালদার। তাকে তারা চোর সাজিয়ে এক পেশ করে রেখেছে।
তিনি বলেন, তারা হালদার। তাদের সঙ্গে আমার কোন সমস্যা নাই। তবে মোহাম্মদ আলীর কাছ থেকে মাছের পোনা কেনার সময় আমি ওই টাকার জামিনদার ছিলাম। এ কারনে তাদের ওখানে যাওয়া।
তারা আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ করেছেন, তা সব মিথ্যা। তবে টাকা নিয়ে হালকা কথা কাটাকাটি হয়েছিল। আপনার কোন দলীয় পরিচয় আছে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন না কোন দলীয় পদ নাই।
এ প্রসঙ্গে সমিতির সাধারণ সম্পাদক কানাই হালদার জানান, আমিও মিটিংয়ে ছিলাম। যারা টাকা পাবে তারা গিয়েছিল। যার মধ্যে ছিল রাজিবুল,মোহাম্মদ আলী, মোহাম্মদ আলীর ছেলে। আর যে টাকার কথা বলছে, সেটা মিথ্যা। আমাদের সমিতির টাকাই নাই। সমিতি চলছে লোকসানে।
বিষয়টি নিয়ে কোটচাঁদপুর থানার ডিউটিরত উপপরিদর্শক ফরিদ হোসেন বলেন,জগদীশ বাওড়ের ঘটনা নিয়ে একটা অভিযোগ হয়েছে। তারা বলেছেন, বাওড়ে চাষ করলে বিবাদের টাকা দিতে হবে।
টাকা দিতে অপরগতা জানালে ১৩ তারিখ রাতে তারা এসে আমাদের উপর হামলা করেন। এ সময় তাদের কাছে ১২ লাখ টাকা তারা ছিনিয়ে নেন বলে তারা জানান।