উপজেলা শিশু কল্যান বোর্ডের মাধ্যমে নতুন মায়ের কোল পেল কোটচাঁদপুরে সড়কের পাশে পড়ে থাকা শিশুটি। গতকাল সোমবার দুপুরে নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয় থেকে শিশুটিকে হস্তান্তর করা হয়।
জানা যায়,গেল বৃহস্পতিবার (২৬-১০-২৩) তারিখ সকালে সোনিয়া খাতুন ও জিনিয়া খাতুন দুই বোন হাটছিল কোটচাঁদপুর থেকে তালসার যাওয়া সড়কে।
এ সময় সোনিয়া খাতুন কাপড়ে মোড়া বাচ্চাটি দেখতে পান সড়কের পাশে। কাছে গিয়ে জীবিত বুঝতে পেরে কোলে তুলে নেন বাচ্চাটিকে। এরপর বাড়িতে ফিরে আসেন দুই বোন।
এলাকায় জানাজানি হয়,বাচ্চা পড়ে পাওয়ার ঘটনাটি। খবর পান উপজেলা সমাজ সেবা অফিস, নির্বাহী কর্মকর্তা সহ সংশ্লিষ্টরা। পরে শিশুটিকে পড়ে পাওয়া মা সোনিয়ার কাছে রেখে কুশনা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শাহারুজ্জামান সবুজের জিম্মায় দেন সংশ্লিষ্টরা।
এরপর উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম, তাঁর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে শিশুটির অভিভাবকত্ব নিতে চাওয়া ব্যক্তিদের নিকট থেকে আবেদন আহবান করেন।
এরপেক্ষিতে ওই শিশুটির অভিভাবকত্ব নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিশু কল্যান বোর্ডের সভাপতি বরাবর আবেদন করেন,ওই শিশুটির কুড়িয়ে পাওয়া মা সহ ৯ জন।
রবিবার প্রত্যেকের পৃথক ভাবে স্বাক্ষাৎকার গ্রহন করেন,উপজেলা শিশু কল্যান বোর্ড। এরপর সবাইকে বাড়ি ফিরে যেতে বলেন সংশ্লিষ্টরা।
সোমবার দুপুরে শিশু কল্যান বোর্ডের উপ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ৯ জনের মধ্যে ৩ জনকে প্রাথমিক ভাবে মনোনীত করেন,কমিটি। মনোনীতরা হলেন, যশোর বাঘারপাড়ার মুক্তা খাতুন (২৩),কোটচাঁদপুরের রামপ্রসাদ মজুমদার,ঝিনাইদহ সদরের ফাতেমা খাতুন।
পরে ওই ৩ জনের আবারও স্বাক্ষাৎকার গ্রহন করেন,কমিটি। এরপর কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফাতেমা -সোহেল দম্পতির হাতে তুলে দেন শিশুটিকে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সহকারী কমিশনার (ভুমি) নিরুপমা রায়,কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও উপকমিটির আহবায়ক ডাঃ আব্দুর রশিদ,সদস্য সচিব ও সমাজ সেবা কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম, কমিটির সদস্য সাবেক মুক্তি যোদ্ধা কমান্ডার তাজুল ইসলাম,ডাঃ তানভীর জামান প্রতিক।
এদিকে বাচ্চাটির কুড়িয়ে পাওয়া মা সোনিয়া খাতুন, অভিযোগ করে বলেন,আমার একটা বাচ্চা মারা গেছে। আল্লাহ ওই বাচচাটিকে আবার আমার কোলে দিয়ে ছিল। আমি পাবার পর থেকে বুকের দুধ পান করাচ্ছি। তারা আমার কথা ভাবলেন না,তারা ভাবলেন ধন সম্পত্তির কথা। তিনি এ সব বলছিলেন আর কাঁদছিলেন। পরে তিনি ক্ষুব্দ হয়ে মনে কস্টো নিয়ে খালি হাতে বাড়িতে ফিরে গেলেন।
অন্যদিকে ফাতেমা -সোহেল দম্পতি বাচ্চাটিকে কোলে পেয়ে খুশিতে বলেন, অনেক দিন পর হলেও আল্লাহ আমাদের কথা শুনেছেন। আমরা পিতা – মাতা হতে পারলাম। আমরা তাকে সারা জীবন এ ভাবে আলগে রাখবো। আপনারা আমাদের জন্য ও বাচ্চাটির জন্য দোয়া করবেন।
কমিটির দায়িত্ব প্রাপ্ত সভাপতি ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিরুপমা রায় বলেন,উপজেলা শিশু কল্যান বোর্ড আছে। সেই বোর্ড একটা উপ-কমিটি করে দিয়ে ছিল। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাচ্চাটি হস্তান্তর করা হয়েছে।