চুরির অভিযোগে যুবককে ধরে মারপিট করে ক্যাম্প থেকে প্রত্যহার হলেন কোটচাঁদপুর লক্ষিপুর পুলিশ ফাঁড়ির সহ-উপরিদর্শক (এএসআই) শামসুল আলম বিশ্বাস।
বুধবার তাকে ক্যাম্প থেকে প্রত্যহার করা হয়। অন্যদিকে চুরির মিথ্যা অভিযোগ থেকে মুক্তি ও মারপিটের বিচার চেয়ে সংশ্লিষ্টদের বরাবর আবেদন করেছেন নির্যাতিত ওই যুবক।
ভুক্তভোগী আব্দুস সালাম বলেন,গেল ৫ মার্চ সকাল ৯টার সময় কিছু জিনিসপত্র কিনতে পাঁচলিয়া বাজারে যায়। এ সময় লক্ষিপুর পুলিশ ফাঁড়ির দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত সহ-উপপরিদর্শক (এএসআই) শামছুল আলম, আমার গতি রোধ করে, ধরে ক্যাম্পের মধ্যে নিয়ে যান। এরপর চোখ, মুখ ও হাত পা বেঁধে মিথ্যা চুরির অপবাদে কাঠের লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকে। এতে করে আমার গোপন অঙ্গ সহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কালো দাগের সৃষ্টি হয়ে যায়। একপর্যায় ওই দারোগার নির্যাতন সয়তে না পেরে টাকা চুরির কথা স্বীকার করি। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক চেয়ারম্যান কাবিল উদ্দিন বিশ্বাস,ইউপি সদস্য আশরাফুল ইসলাম,যুবলীগ নেতা সাজ্জাদ হোসেন। ওই সময় দারোগা আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। আমি তখন আমার মামা মোশাররফ হোসেন কে টাকা আনতে বলি। মামা টাকা দেয়ার পর,দারাগা আমাকে ক্যাম্প থেকে ছেড়ে দেন।
তিনি আরাে বলেন, দারোগার মারপিটে আমি খুবই অসুস্থ্য ছিলাম। ছাড়া পেয়ে বাড়ি আসার পর চিকিৎসা নিতে কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যায়। এখন বাড়িতে অসুস্থ্য অবস্থায় আছি। সালাম বলেন, আমি চুরি করিনি, তারা আমার নামে থানায় মিথ্যা মামলার অভিযোগ করেছেন। এ মিথ্যা চুরির অভিযোগ থেকে আমি মুক্তি পেতে চাই। সাথে সাথে ওই দারোগার অমানুষিক নির্যাতনের বিচারও দাবি করছি।
এ দিকে চুরির অভিযোগে আব্দুস সালামকে বেধড়ক মারপিট ও টাকা জরিমানা করলেও ওই ঘটনার আরেক অভিযুক্ত মিন্টু রহমান রয়েছে ধরা ছোয়ার বাইরে। চুরির ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না হওয়ায় হতাশ হয়েছেন এলাকাবাসী।
এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে লক্ষিপুর পুলিশ ফাঁড়ির সহউপপরিদর্শক (এএসআই) শামছুল আলম বিশ্বাসকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে ওই (এএসআই) বুধবার পুলিশ ফাঁড়ি ত্যাগ করেছেন বলে জানা যায়।
বিষয়টি নিয়ে লক্ষিপুর ওই পুলিশ ফাঁড়ির বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত সহউপপরিদর্শক (এএসআই) মহন বলেন, আমি ছুটিতে ছিলাম। মঙ্গলবার থানায় এসেছি। স্যার আমাকে ডেকে ক্যাম্পে আসতে বলেন। আমি ঘটনার কিছুই জানিনা। বুধবার দায়িত্ব নেবার পর শামসুল আলম বিশ্বাস ফাঁড়ি ত্যাগ করেছেন জানিয়েছেন ওই পুলিশের সহ উপপরিদর্শক।
এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুর মডেল থানার (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) মঈন উদ্দীন জানান,ঘটনার সময় আমি থানায় ছিলাম না। ছুটিতে ছিলাম। ওসি তদন্ত জগন্নাথ চন্দ্র দায়িত্বে ছিলেন। যুবক নির্যাতনের অভিযোগ শোনার পর, আমি ওই (এএসআই) শামছুল আলমকে ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করেছি।
তিনি বলেন, নির্যাতন ও টাকা আদায়ের ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।