কার্ড আছে চাল নেই, চাল আছে কার্ড নেই, কার্ডও আছে, চালও আছে, নেই কার্ডের প্রকৃত মালিক। কার্ডের জায়গায় কার্ড না থাকার এমন চাঞ্চল্যকর তথ্যের খোঁজ মিলেছে কুষ্টিয়ার খোকসার শিমুলিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে।
ওই ওয়ার্ডটির বাসিন্দা জসিম মুনসীর ওমএমএসের কার্ড ইস্যু হয়েছে প্রায় চার বছর আগে। ইতোমধ্যেই ওই কার্ড থেকে চাল উত্তোলন হয়ে গেছে ১৬ বার। কিন্তু সেই খবর জানেনই না হতদরিদ্র জসিম মুনসী। অথচ তার নাম রয়েছে ওয়ার্ডের তালিকার এক নম্বরে। কেঁদে কেঁদে এমন অভিযোগই করলেন হতদরিদ্র জসিম মুনসী।
আর এমন অভিযোগ তুলে ধরা হলে পাল্টাপাল্টি পরস্পরকে দোষারোপ করছেন ইউপি চেয়ারম্যান, ডিলার ও ইউপি সদস্য। তবে এই ব্যাপারটি জনসম্মুখে আনেন ওই ওয়ার্ডটির ইউপি সদস্য টিপু বিশ্বাস।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইউনিয়নের ওএমএসের ডিলার আব্দুল মান্নান হলেও প্রকৃতপক্ষে এর নিয়ন্ত্রণ করেন একসময়ে দাপুটে সন্ত্রাসী আকুত আলী।
তবে এসব অনিয়মের ব্যাপারে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে, হতদরিদ্র জসিম মুন্সী বলেন, আমার কাছ থেকে প্রায় ৫ বছর আগে প্রয়াত লুতফর মেম্বার ভোটার আইডি কার্ড নিয়েছিল ১০ টাকা কেজির চাল দেওয়ার জন্য। কার্ড হয়েছিল তারপর থেকে এই কার্ড থেকে ৩০ কেজি করে ১৬ বার চাউল উত্তোলন করা হয়েছে। কিন্তু একবারও আমি চাউল পাইনি।
ব্যাপারটি নিয়ে জসীম মুন্সীকে প্রথম জানায় ইউপি সদস্য টিপু বিশ্বাস। আসলে এর মধ্যে ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও ডিলারের প্রত্যক্ষ দোষ না থাকলেও দায় এড়াতে পারেন না ডিলার আব্দুল মান্নান। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, নামের আব্দুল মান্নান ডিলার হলেও তার সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে আকুত আলী নামের অদৃশ এক শক্তি!
এ ব্যাপারে শিমুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ বলেন, তালিকা করার ব্যাপারে আমার কোনো হাতই নেই। এটা মেম্বারের দায়িত্ব। আর ডিলার এটি সুসম্পন্নভাবে ডিস্ট্রিবিউট করবেন ওমএমএসের ডিলার। কিন্তু কেনো এমন হল- এটা আমিও বুঝছি না। তবে কে এই চাল চোর- তাকে খুঁজে বের করা হবে।
অপরদিকে, ডিলার আব্দুল মান্নানের দাবি- মেম্বার-চেয়ারম্যানের তালিকা অনুসারেই চাল দেওয়া হয়। তবে কার কার্ড দিয়ে কে চাল নিচ্ছে এটা দেখার বিষয় তার না।
তবে ডিলার এমন দাবি করলেও স্থানীয় প্রতিনিধিদের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করেই তিনি চাল বিতরণ করতে পারেন। তাহলে- কার্ড দিয়ে এই ১৬ বস্তা চাল উত্তোলন করল কে?