মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার প্রি-ক্যাডেট স্কুলের অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম ও সহকারি শিক্ষিকা তাহেরা খাতুন দু’জন একই সময়ে দুটি করে বিদ্যালয়ে চাকুরি করে আসছেন বলে জানা গেছে।
তবে অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম দাবি করেছেন যেহেতু সরকারি প্রতিষ্ঠান নয় সেহেতু একই সাথে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করার বৈধতা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মীর হাবিবুল বাশার বলেন, অধ্যক্ষ কোন সময় একই সময়ে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করতে পারেন না। এ বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এদিকে একটি সূত্র জানায়, অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম যুগিন্দা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৯ বছর আগে যোগ দিলেও তিনি প্রথম এক বছর বিদ্যালয়ে ক্লাস নিলেও পরে তাকে আর ক্লাস নিতে দেখা যায়নি। অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম অবশ্য সাংবাদিকদের বলেন হাজিরা খাতা দেখলে বুঝতে পারবেন আমি সেখানে ক্লাস করেছি কিনা।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ ৪ বছর যাবৎ গাংনী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মীর হাবিবুল বাসার এর যোগ সাজশে ১৯ বছর ক্লাসে অনুপস্থিত থাকার পরেও শিক্ষকদের পদ এমপিও ভুক্তি হয়েছে।
তবে একই ব্যাক্তি একই সাথে দুটি বিদ্যালয়ে দ্বায়িত্ব পালন করা নিয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গাংনী প্রি ক্যাডেটের দুজন শিক্ষক মাসে ৫ হাজার টাকা করে ঘুষ দিয়ে অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম ও সহকারি শিক্ষিকা তাহেরা খাতুন একই সাথে দুটি বিদ্যালয়ে দ্বায়িত্ব পালন করে আসছে।
জানতে চাইলে মীর হাবিবুল বাশার বলেন এ ধরণের কথা একেবারেই ভিত্তিহীন।
যুগিন্দা গ্রাম বাসী জানান, সিরাজুল ইসলাম প্রথমে যুগিন্দা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী পদে চাকুরী নিয়ে মাত্র ১বছর স্কুলে ক্লাস করেছে। এর পর থেকে তাকে স্কুলে আর দেখা যায়নি। স্থানীয়রা মনে করেন স্কুল ম্যানেজিং কমিটি ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সহযোগীতায় তিনি ১৯ বছর ধরে গাংনী প্রি ক্যাডেট এন্ড হাইস্কুলের অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত আছেন।
একই ব্যাক্তি কী ভাবে দুইটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক পদে চাকুরী করে তা সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে খতিয়ে দেখে দুদক’কে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সচেতন মহল দাবি জানিয়েছেন।
গাংনী পৌর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তাহেরা খাতুন দীর্ঘ ৫বছর ক্লাসে না উপস্থিত হয়ে বেতন উত্তোলন করছেন। তিনি গাংনী প্রি ক্যাডেট এন্ড হাইস্কুলের কর্মরত আছেন।
স্থানীয়রা জানান, তাহেরা খাতুন প্রথমে গাংনী পৌর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ নিয়ে ছিলেন। তার পদ এমপিও না হওয়ায় তিনি ৫ বছর ক্লাসে যাওয়া বন্ধ করে দিয়ে। তিনি গাংনী প্রি ক্যাডেট স্কুলে সহকারী পদে যোগদান করে বর্তমানে কর্মরত আছেন। তিনি দুইটি স্কুলে সহকারী পদে চাকুরী করছেন এবং বেতন উত্তোলন করছেন। ক্লাসে না গেলেও ইতিমধ্যে তাদের পদ এমপিও ভুক্ত হয়েছে।
এব্যাপারে অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম তিনি অভিযোগের কথা স্বীকার করে বলেন, আমি গাংনী প্রি ক্যাডেট স্কুলে ১৯ বছর কর্মরত আছি। প্রথমে যুগিন্দা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী পদে নিয়োগ নিয়েছিলাম, কিছুদিন ক্লাস করেছি। আমি গরিব মানুষ সংসার চালানোর জন্য গাংনী প্রি ক্যাডেট স্কুলে অধ্যক্ষ হিসেবে রয়েছি। বর্তমানে যুগিন্দা মাধ্যমিক বিদ্যালয় এমপিও ভুক্ত হয়েছে। আমি দুই একদিনের মধ্যে এখান থেকে চলে যাব। তিনি এ খবর প্রকাশ না করার জন্য সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন।
এ ব্যাপারে সহকারী শিক্ষক তাহেরা খাতুন বলেন, আমার স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমাকে চাকুরী করতে দিয়েছে। তাই আমি প্রি ক্যাডেট স্কুলে সহকারী পদে রয়েছি। আমার পদ এমপিও ভুক্ত হয়েছে আমি দুইদিনের মধ্যে গাংনী পৌর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চলে যাব।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান জানান বিষয়টি এর আগেও আমি শুনেছি দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
-এ সিদ্দিকি শাহীন