শহীদদের স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণসহ আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার গাংনী মুক্ত দিবস পালন করা হয়েছে।
১৯৭১ সালের ৫ ডিসেম্বর মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার জন্য একটি গৌরবময় দিন। এই দিনে মুক্তিযোদ্ধারা গেরিলা হামলা চালিয়ে পাক হানাদার বাহিনীর সদস্যদের গাংনী উপজেলা থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেন।
দিবসটি উপলক্ষে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় গাংনী উপজেলা মুক্তিযুদ্ধ কমপ্লেক্স চত্বরে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়।
পতাকা উত্তোলন করেন গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বানী ইসরাইল, গাংনী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার শামসুল আলম সোনা প্রমুখ। পরে মুক্তিযুদ্ধ কমপ্লেক্সে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে আয়োজিত আলোচনা সভায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে যোগ দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা, গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বানী ইসরাইল। এসময় বক্তব্য রাখেন, বীরমুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান, হিসাব উদ্দীন মাস্টার, ইদ্রিস হোসেন, রায়হানুল কবীর, আলী হোসেন, গুরুদাশ হালদার, আব্দুর রউফ, আবুল হোসেন, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান প্রজন্ম কমান্ডের গাংনী শাখার আহবায়ক কামরুজ্জামান প্রমুখ। এর আগে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স চত্তরে অবস্থিত স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে মুক্তিযোদ্ধাদের। কোনোভাবেই ইতিহাস যাতে বিকৃতি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সামসুল আলম সোনা বলেন, ১৯৭১ এর ৫ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পগুলোতে একযোগে হামলার পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী ৫ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা কড়ুইগাছি, রাইপুর-শিমুলতলা, কুঞ্জনগর, ঝোড়পাড়া, শহড়াবাড়িসহ কয়েকটি গ্রাম থেকে মুক্তিযোদ্ধারা গাংনী বাজারে রওনা হয়ে গোপালনগরে একত্র হন। মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিভিন্ন ক্যাম্পে একযোগে অভিযান চালান। এরপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সদস্যরা কুষ্টিয়া রওনা হওয়ার পথে শুকুরকান্দির এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের অপর একটি দল তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য নিহত হয়। এরপর পাকিস্তানি সেনারা চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া হয়ে পালিয়ে যায়। এভাবেই গাংনী উপজেলা হানাদারমুক্ত হয়।