এক ছেলে পুলিশ সদস্য, অপর ছেলে কুয়েত প্রবাসী। বৃদ্ধ পিতার যায়গা হয়নি কোনো ছেলের কাছে। সংসার চালানোর জন্য টাকা পয়সাও দেইনা কেউ। তাই স্থানীয় সাপ্তাহিক হাটবাজারে লেবু ও আমড়া বিক্রি করেই নিজের পেট চালাতেন বৃদ্ধ আবু বক্কর (৭০)। প্রথম স্ত্রী মারা যাবার পর দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলেন। সেও চলে গেছে তাঁকে ছেড়ে। ছোট্ট কুঁড়েই ঘরেই ছিলো তাঁর বাস। তিনদিন আগেও প্রতিবেশীরা তাঁকে ছাগলের জন্য কাঁঠাল পাতা কাটতে দেখেছেন। তারপর তিনদিন কেউ তাঁর খোঁজ পাননি।
আজ বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বিকালের দিকে ঘর থেকে দূর্গন্ধ বের হয়। প্রতিবেশীরা তাঁর ঘরে গিয়েই দেখতে পান অর্ধগলিত মরদেহ পড়ে আছে আবু বক্করের।
আবু বক্কর গাংনী উপজেলার হোগলবাড়িয়া গ্রামের উত্তরপাড়া এলাকার মৃতু চাঁদ আলীর ছেলে।
গাংনী থানার কুমারিডাঙ্গা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই সোয়েবুর রহমান জানান, স্থানীয়দের দেয়া খবরের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে তিনি জানান, আবু বক্করের প্রথম স্ত্রী মারা যাবার পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন। তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীও ফেলে রেখে চলে গেছে। বড় ছেলে রতন কুয়েত প্রবাসী। ছোট ছেলে জিয়া বাংলাদেশ পুলিশে চাকুরী করেন। সে সুবাদে নড়াইল জেলাতে থাকেন তিনি। বৃদ্ধ আবু বক্কর ব্যবসা করে নিজেই রান্না করে খাওয়া দাওয়া করতেন। একাই থাকতেন ছোট্ট কুড়ে ঘরটিতে।
স্থানীয় প্রতিবেশী কবির হোসেনসহ বেশ কয়েকজন জানান, কোনো ছেলেই তার বাবাকে খেতে দিতো না। ছেলেরা অন্য যায়গায় বাড়ি করেছে। তাদের স্ত্রী সেখানেই থাকেন। আবু বক্কর একাই রান্না করে খাওয়া দাওয়া করতেন। অসুখ বিসুখেও কেউ দেখতেন না। ধারণা করা হচ্ছে স্ট্রোক করে বা অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন তিনি।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বানী ইসরাইল বলেন, ধারনা করা হচ্ছে অসুস্থ হয়েই সে মারা গেছে। তবে, তার ছেলে বা আত্মীয় স্বজন আসার পর বোঝা যাবে। মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।