দুজন দুজনাকে অনেক বেশি ভাল বাসতো ওরা। তিন বছরের ভালবাসায় পরিবারের সম্মতিতে দুজনে বিয়েও করেছিল। সুখেই চলছিল ওদের সংসার। এক বছর আগে ওদেও বিয়ে হয়। প্রায় দিন বিকেলে দুজন দুজনার হাত ধরে গ্রামে ঘুওে বেড়াত। তবে কি এমন ঘটলো? বিয়ের এক বছরের মধ্যে দুজনাকেই আত্নহুতি দিতে হলো! কি এমন ঘটেছিল এমন প্রশ্ন গ্রামবাসীর। গ্রামবাসীরা বলছিলেন প্রেমিক যুগল সাগর ও চামেলীর কথা।
স্ত্রীর ওড়নায় ফাঁস দিয়ে একইসাথে স্বামী সাগর হোসেন (১৮) ও স্ত্রী চামেলী খাতুন (১৬) আত্মহত্যা করেছে। ঘটনাটি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার দিঘলকান্দি গুচ্ছগ্রামে।
আজ মঙ্গলবার (০৭ জুন) দুপুরে চামেলীর পিতা ও প্রতিবেশিরা ঘর থেকে দু’জনের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। তবে স্বামী স্ত্রীর আত্নহত্যার কারণ নির্ণয় করতে পারেনি পুলিশ। কি কারণে তারা আত্মহরনের পথ বেছে নিলেন তা বুঝতে পারছেন না উভয় জনের পরিবারের সদস্যরাও।
স্থানীয়রা জানায়, প্রেমের সম্পর্কে মাধ্যমে এক বছর আগে গাংনী উপজেলার দিঘলকান্দি গ্রামের কালুর মেয়ে চামেলীর সাথে সদর উপজেলার পাটকেলপোতা গ্রামের ইকতার আলীর ছেলে সাগর হোসেনের বিয়ে হয়।
পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, চামেলী খাতুন বেশ কয়েকদিন ধরে পিতার বাড়িতে ছিলেন। সোমবার গভীর রাতে পিতার সাথে দ্বন্দ্ব করে শ্বশুরবাড়িতে চলে আসে সাগর। দুপুরের দিকে সাগর ও চামেলী মায়ের কাছে রুটি খাওয়ার আবদার করে। বাড়িতে আটা না থাকায় দোকানে আটা কিনতে গিয়েছিলেন চামেলীর মা হাফিজা খাতুন। এসময় চামেলীর ছোট বোন শিল্পী স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে এসে ঘরের আড়ার সাথে একই ওড়নায় দু’জনকে ঝুলে থাকতে দেখে চিৎকার দেয় । স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পথে তাদের মৃত্যু হয়।
চামেলীর ছোট বোন শিল্পী খাতুন জানায়, আমার বোন এবং দুলাভাই দুজনেই ভালবেসে বিয়ে করেছিল। যখন বেড়াতে আসত তখন দু’জনেই এক সাথে আসতো। বিকেল হলে দুজনেই হাত ধরে বিভিন্ন বাড়িতে ঘুরেও বেড়াতো। আমি স্কুলে যাবার আগেও দুলাভাইয়ের সাথে গল্প করেছি। তখনও দুলাভাই আমার সাথে অনেক ঠাট্টা করে গল্প করেছেন। স্কুল থেকে ফিরে ঢুকতেই দেখি বোনের ওড়নায় ঝুলছিল দুজন। আমার আত্নচিৎকারে প্রতিবেশিরা ছুটে আছে।চামেলীর মা হাফিজা খাতুন জানায়, সাগর অন্যদিন আমাদেও বাড়িতে বেড়াতে আসলে আমাদের মোবাইলে জানায়। কিন্তু এবার কিছুই জানাইনি। এসেও মন খারাপ দেখেছি। কি হয়েছে জিজ্ঞেস করেছি কিন্তু কিছুই বলেনি।
গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ঘটনাস্থানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। দুজনের মরহে উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। আত্মহত্যার কারণ এখনও চিহ্নিত করা যায়নি। কারন জানাগেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।