মেহেরপুরের গাংনীতে সরকারি ভাবে আমন ধান ক্রয়ের লক্ষে কৃষক বাছাইয়ে অনিয়মের অভিযোগে লটারির অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন গাংনী পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম ও তার লোকজন। অনুষ্ঠান থেকে বেরিয়ে এসে তার উপজেলা কৃষি অফিসারের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিতে থাকেন ।
তবে কৃষি অফিসার বলছেন সময়ের অভাবে সঠিকভাবে কৃষক বাছাইয়ে কিছুটা অনিয়ম হয়েছে। এদিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু কৃষক বাছাইয়ের লক্ষে আগামী ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত লটারীর কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
গাংনী উপজেলায় এ বছর সকারিভাবে কৃষকদের কাছ থেকে ১৬৮৮ মেঃ টন ধান ক্রয় করা হবে। কৃষিকার্ডের আওতাভুক্ত জনপ্রতি চাষির কাছ থেকে প্রতিকেজি ২৬ টাকা দরে একটন করে ধান ক্রয় করা হবে। মঙ্গলবার সকাল ১০ টার সময় উপজেলা পরিষদ হল রুমে কৃষক বাছাই কল্পে লটারি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন উপজেলা কৃষি অফিস ও উপজেলা খাদ্য অফিস।
অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে গাংনী পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে কৃষি অফিসার মনগড়া ভাবে অফিসে বসেই কৃষকদের নামের তালিকা প্রস্তত করেছেন।
প্রকৃত চাষিদের বাদ দেয়া হয়েছে। তালিকা নিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথীবৃন্দ ,স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও কৃষকদের তোপের মুখে পড়ে কৃষি অফিসার কে এম শাহাবুদ্দিন আহমেদ। বিভিন্ন কৃষক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তালিকা প্রস্তততে অনিয়ম নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় কৃষি অফিসারকে।
এ ব্যাপারে কৃষি অফিসার কেএম শাহাবুদ্দীন জানান, সময়ের স্বল্পতার কারণে কৃষকের নামের তালিকা প্রস্তুতে কিছুটা অসঙ্গতি থাকতে পারে। চলতি মাসের ১২ তারিখের মধ্যেই সঠিক তালিকা করা হবে। কেউ যেন কোন প্রশ্ন তুলতে না পারে সে ব্যপারে ব্লক সুপারভাইজারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
গাংনী উপজেলা খাদ্য অফিসার মোঃ খলিলুর রহমান বলেন, কৃষকদের তালিকা প্রস্ততের ব্যপারে খাদ্য অফিসের কোন হাত নেই,এব্যাপারে কৃষি অফিস কর্তৃক তালিকা করে থাকেন। সে তালিকা অনুযায়ী খাদ্যশস্য ক্রয় করা হয়।
উপজেলা খাদ্য শস্য সংগ্রহ কমিটির সভাপতি ও উন্মক্ত লটারি পরিচালনা অনুৃষ্ঠানের সভাপতি গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে এবং সকল আমন ধানচাষিকে তালিকাভুক্ত করনের লক্ষ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগীতায় নতুন করে তালিকা প্রস্ততের নির্দেশ দেয় কৃষি অফিসারকে।
আইনশৃখলা বজায় রাখার স্বার্থে আগামী ১২ ডিস্বের পর্যন্ত লটারি স্থাগিত করা হয়। আগামী ১২ ডিসেম্বর তারিখে উন্মক্ত লটারি হবে বলেন জানান লটারি অনুষ্ঠানের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান।এছাড়া কৃষি অফিসের ব্লক সুপার ভাইজারদের প্রতিটি কৃষকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বচ্ছ তালিকার প্রস্তত করনের নির্দেশ দেন।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ খালেক জানান, যেহেতু কৃষক তালিকা নিয়ে কিছু মতবিরোধ উঠেছে সেহেতু সঠিক তালিকা করে পুণরাই লটারি করা হবে।
মেহেরপুর-২ গাংনী আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার লটারি ১২ তারিখ পর্যন্ত বন্ধ করেছেন এতে আমার কোনো দ্বিমত নেই। আমিও চাই দু একদিন দেরি হলেও প্রকৃত কষকরা সরকারি মুল্যে তাদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করুক। এতে আমার এলাকার কৃষক উপকৃত হবে। উপজেলা নির্বাহী সার লটারি সাময়িক বন্ধ করে সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওবাইদুর রহমান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিন, রাইপুর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম সাকলায়েন সেপু,মটমুড়া ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল আহম্মেদ,বামুন্দি ইউপি চেয়ারম্যান শাহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
– আক্তারুজ্জামান,গাংনী