দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে মেহেরপুরের গাংনীতে শুরু হয়েছে টিসিবির পন্য বিক্রি। এসকল পন্য সকাল ৯টা থেকে বিক্রি শুরু হবার কথা থাকলেও দেরীতে পন্য বিক্রি শুরু হয়।
ফলে কার্ডধারীরা সারাদিন অপেক্ষা করেন স্বল্প মুল্যে তাদের পন্য নেয়ার জন্য। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।
তাছাড়া ডিলারের সংখ্যা কম হওয়ায় দু তিনটি ওয়ার্ডের লোকজন দীর্ঘ লাইনে ভীড় জমায় তা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন।
গাংনী উপজেলা প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় ৯টি ইউনিয়নের জন্য ৬ জন ডিলার নিযুক্ত করা হয়। মোট ৩৫ হাজার ১১৯ টি পরিবার এখান থেকে ন্যায্য মূল্যে টিসিবির পন্য কিনতে পারবেন।
দু’কেজি চিনি, দু’কেজি ডাল ও দু’লিটার তেলের জন্য প্রদান করতে হবে ৪৬০ টাকা। বামন্দী, ষোলটাকা রাইপুর, সাহারবাটি, কাথুলী ও তেতুঁলবাড়িয়া ইউনিয়নের জন্য মাত্র তিনজন ডিলার নিযুক্ত করা হয়। এতে করে দুর্ভোগ বেড়ে গেছে।
প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ি, সকাল ৯টা থেকে পন্য বিক্রি শুরুর কথা থাকলেও টিসিবির লোকজন আসে দুপুর ১২ টায়। এদিকে পন্য নিতে আসা নারী পুরুষ সকাল থেকেই ভীড় জমায়। দেরীতে আসায় হুড়োহুড়ি করে বিশৃঙ্খলা শুরু হয়।
বিষয়টি হাতাহাতি পর্যন্ত গড়ায়। ভীড় সামাল দিতে হিমশিম খান আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অনেকেই ভীড়ের মধ্যে কার্ড হারিয়ে ফেলেন। ফলে শুন্য হাতে ফিরে যান তারা।
ষোলটাকা ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন পাশা জানান, হঠাৎ করেই টিসিবির পন্য দেয়া শুরু হয়। করোনা কালীণ সময়ে যারা অনুদান পেয়েছেন যারা কর্মসৃজন প্রকল্পের মজুর ও সরকারী সুবিধাভোগি তারাই টিসিবির পন্য পাবার তালিকায় রয়েছেন। তালিকায় নাম ও মোবাইল নম্বর রয়েছে।
গ্রামের নাম না থাকায় এদের কার্ড প্রস্তুত করতেও হিমশিম খেতে হয়েছে। ডিলাররা মালামাল আনতে দেরী করায় লোকজন সমস্যায় পড়ছে। ডিলারের সংখ্যা বাড়ানো ও নির্দিষ্ট সময়ে পন্য বিক্রি শুরুর দাবী জানান।
সাহারবাটি ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মশিউর রহমান জানান, উপজেলায় থেকে আমাদের কাছে যে তালিকা দেয়া হয়েছে সেখানে শুধুমাত্র নাম এবং মোবাইল নাম্বার দেয়া রয়েছে। অনেকের মোবাইল বন্ধ অথবা নাম্বার সঠিক না। যার জন্য তাদের খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। পন্য বিক্রেতারা প্রতিটি গ্রামে গিয়ে বিক্রি করলে গরিব মানুষ অনেক সুবিধা পাবে।
২১ মার্চ সোমবার টিসিবির পন্য নিতে এসেছিলেন মেহেরপুরের গাংনীর ভোলাডাঙ্গা গ্রামের গৃহবধু নুরজাহান। বাড়ি থেকে ভ্যানযোগে এসেছিলেন মিকুশিস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।
সকালে এসে বিকেল সাতে তিনটায় মালামাল নিয়ে বাড়ি ফেরেন। নুরজাহান পেশায় দিনমজুর। ওই দিন তামাক ঘর জালানো বাদ দিয়ে মালামাল নিতে আসেন। মজুরীতো পাননি আবার গাড়ি ভাড়া লেগেছে তার ৫০ টাকা।
একই অবস্থা আব্দুল জলিলের। তিনি এসেছিলেন মানিকদিয়া গ্রাম থেকে। তারা জানালেন, টিসিবির পন্য নিতে এসে একদিকে যেমন দুর্ভোগ অন্যদিকে আর্থিক লোকসান। ধারে কাছে পন্য বিক্রি কিংবা সঠিক সময়েপন্য বিক্রি শুরু হলে জনগন লাভবান হতো।
এদিকে মালঅমাাল নিতে আসা মানিকদিয়া গ্রামের কয়েকজন তাদের কার্ড হারিয়ে ফেলায় শুন্য হাতে ফিরেছেন। প্রচন্ড ভীড়ে তাদের কার্ডটি হারিয়ে গেছে বলে জানান তারা। আবার অনেকেই কার্ড চুরিও করেছেন। নাম ও মোবাইল নম্বর লেখা থাকায় সেটি চেনারও উপায় নেই।
এব্যাপারে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী খানম জানান, বেশ কিছু নিয়ম মেনেই ডিলাররা পন্য বিক্রি করেন। নিয়ম মানতে গিয়েই একটু দেরী হয়। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। ডিলারের সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি জেলা প্রশাসকের তাই এ ব্যাপারে কিছুই করার নেই বলে জানান তিনি।