শীতের শেষ মুহুর্তে শিশুদের ডায়রিয়া জনীত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ডায়রিয়া আক্রান্তের শিশুদের মধ্যে এক বছর বয়সের শিশুদের সংখ্যায় বেশি। মায়েদের সচেতনতা ও শিশুদের অযত্ন এবং অবহাওয়ার পরিবর্তনের কারনে শিশুদের আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বলে জানান চিকিৎসকরা।
জানাগেছে, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেকে ২০২০ সালের জানুয়ারী মাসের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ডায়রিয়া জনীত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে ১৩৫ জন শিশু ।
চলতি ফেব্রুয়ারীর এক থেকে ১৪ তারিখে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে ভর্তি হয়েছে ১২৪ জন শিশু। ১৫ ই ফেব্রুয়ারী শনিবার ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে দুপুর পর্যন্ত অর্ধবেলা ভর্তি হয় ৮ জন শিশু। ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত শিশু নাফিম এর মা জানায়, প্রথমে বোমি, তার পর পাতলা পায়খানা শুরু হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে আজ শানিবার সকালে হাসপাতালে ভর্তি করি। চাদপুর গ্রামের শফিকুলের ছেলে সালমান (১৫মাস) ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয় দু’ দিন আগে। প্রথমে গ্রামে চিকিৎসা নিয়ে নিরাময় না হলে গতকাল হাসপাতালে ভর্তি করি। বর্তমানে তার অবস্থা এখনও সুস্থ্য নয়। গাংনী মহিলা কলেজ এলাকায় সাইদুলের শিশু কন্যা খাদিজা (১২ মাস) ডায়রিয়াতে আক্রান্ত হয়ে মুমুর্ষ হয়ে উঠেছে। হাসপাতালে নিলে চিকিৎসা দিয়ে তাকে সুস্থ্য করা হচ্ছে । তবে চিকিৎসা নিতে আসা শিশুদের অভিভাবকরা জানান বিশের ভাগ ওষুধ কিনে নিতে হচ্ছে। হাসপাতালে তেমন কোন ওষুধ দিচ্ছেনা হাসপাতাল কর্তপক্ষ।
এসময় নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাউন্ড কালীন চিকিৎসক জানান, শিশুদের চিকিৎসার ব্যাপারে আমরা খুবই তৎপর। ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুদের নিবিড় পর্যবেক্ষনের রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে দাবী করেন। এছাড়াও প্রায় ১০ জন শিশু ইতোমধ্যে সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছেন বলে জানান কর্তব্যরত জনৈক নার্স।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ রিয়াজুল ইসলাম জানান, আবহাওয়া জনীত কারনে শিশুরা ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। শীতের প্রায় শেষ মুহুর্ত। নতুন আবহাওয়া মানিয়ে নিতে কোমলমতি শিশুদের কিছুটা সমস্যা সহ্য করতে হবে। ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা চলতি মাসে বেড়েছে। তবে শিশুদের প্রতি মায়েদের বেশি যত্নবান হতে হবে। শিশুদের পরিস্কার পরিছন্নতার বিষয়ে মায়েরা সচেতন হলে শিশুরোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। কোন শিশু বোমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হওয়ার সাথে সাথে ওর স্যালাইন খাওয়ানো এবং দ্রত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার উপদেশ দেন এ চিকিৎসক। ওষুধ সংকটের বিষয়ে এ কর্মকর্তা বলেন, তিন মাস যাবত কোন ধরনের এন্টিবায়েটিক ওষূধ সরবরাহ না থাকায় একটু সংকট চলছে। আগামী সপ্তাহে চাহিদা পাঠঅনো হবে। তবে এবার প্রয়োজনমত ওষুধ কেনার সুযোগ থাকবে।