গাংনী উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগ তারুণ্য উৎসব ২০২৫ উপলক্ষে যুব কাবাডি (অনুর্ধো-১৭ বালক ও বালিকা) খেলা ও পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকালে গাংনী উপজেলার জোড়পুকুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে এই খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
খেলায় বালক পর্যায়ে জোড়পুকুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মানিকদিয়া এগারপাড়া দাখিল মাদ্রাসার মধ্যে অনুষ্ঠিত খেলায় ৩২ পয়েন্ট অর্জন করে জোড়পুকুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় দল উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ট ও জেলা পর্যায়ে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। খেলায় মানিকদিয়া এগারপাড়া দাখিল মাদ্রাসা দল অর্জন করে ১০ পয়েন্ট।
এছাড়া বালিকা কাবাডি দলের জোড়পুকুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় বালিক দল ৩১ পয়েন্ট অর্জন করে উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ ও মেহেরপুর জেলা পর্যায়ে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। উপজেলা পর্যায়ে রানার্স অপ দল হয় জেটিএস মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় দল, তারা অর্জন করে ৪ পয়েন্ট।
খেলা শেষে বিজয়ী ও রানার্স আপ দলের খেলোয়ারদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা তাদের হাতে কাপ ও মেডেল তুলে দেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, গাংনী উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) সাদ্দাম হোসেন, উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মোতালেব হোসেন, উপজেলা প্রকৌশলী ফয়সাল আহমেদ, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে মোবারক, উপজেলা আনসার ভিডিপি সাঈদুর রহমান, উপজেলা বিআরডিবি অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান, জোড়পুকুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসান আল নুরানী,বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মেহেরপুর জেলা শাখার সদস্য সচীব মুজাহিদুল ইসলাম।
খেলা পরিচালনা করেন, জোড়পুকুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ক্রীড়া শিক্ষক আব্দুল হান্নান ও মানিকদিয়া এগারপাড়া আলীম মাদ্রাসার ক্রীড়া শিক্ষক আব্দুল মাবুদ ও গাংনী উপজেলা ক্রীড়া পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় বক্্িরং দলের কোচ আতর আলী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা বলেন, কাবাডি বাংলাদেশের একটি জাতীয় খেলা। আগেকার দিনে বর্ষাকালসহ সারা বছরই গ্রামাঞ্চালের আনাচে কানাচে এই খেলা দেখা যেতো। সময়ের সাথে সাথে খেলা-ধুলার ধরনও পরিবর্তন হয়েছে। এখনকার ছেলে মেয়েরা মাঠে খেলার পরিবর্তে মোবাইল বা ল্যাপটপের স্ক্রীনে বেশি আসক্ত হচ্ছে। তাই মোবাইল ও কম্পিউটারের স্ক্রীন আসক্ত থেকে বেরিয়ে এসে মাঠের খেলাধুলাকে গ্রহণ করতে হবে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন প্রতিযোগীতার মাধ্যমে আমরা ভালো খেলোয়ারদের বের করে আনতে সক্ষম হবো। তাই, খেলা-ধুলা প্রতিযোগীতার মাধ্যমে এই খেলাগুলো আবারও গ্রামের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে দিতে হবে।
তিনি বলেন, খেলা ধুলার মাধ্যমে ছেলে মেয়েরা শুধু সুস্থাস্থের অধিকারি হবে তা নয়, তাদের মন ও শারীরিক বিভিন্ন হরমনের পরিবর্তনগুলোও সাধিত হবে। ফলে তাদের যে কোনো কাজে মনোযোগও বৃদ্ধি পাবে।
তিনি বলেন, লেখা পড়ার মাধ্যমে মানুষ যেমন অনেক দুর এগিয়ে যেতে পারে, ঠিক তেমনি, খেলা ধুলার মাধ্যমেও এগিয়ে যেতে পারে। একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্টের নাম না জানলেও মানুষ একজন খেলোয়ারের নাম জানে, যেমন মেসি যোগ করেন তিনি। একজন খেলোয়ার তার খেলার মাধ্যমে পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষের হৃদয় জয় করতে পারে। একজন খেলোয়ার আঞ্চলিক বা জাতীয় গন্ডি নয়, তিনি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডেলে বিচরণ করেন। তৃণমুলের খেলোয়ারদের আমরা সুযোগ তৈরী করে দিতে পারলে তারাই জাতীয় পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব করবে। তারাই আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বিচরণ করবে। আমাদের দেশের মান মর্যাদা বিশ্বের বুকে পৌছে দেবে।
এই টূর্ণামেন্টের মাধ্যমে এই খেলাগুলো মানুষের হৃদয়ে প্রথিত থাকবে।
আগামী দিনগুলোতে এই উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে এবং প্রতিটি গ্রামে এই খেলার চর্চা যেনো ধারাবাহিকভাবে চলে সেজন্য শিক্ষার্থী ও ক্রীড়া সংগঠকদের প্রতি উদাত্ব আহবান জানান তিনি।
প্রীতম সাহা আরও বলেন, যারা খেলাধুলার সাথে সম্পৃক্ত থাকে, তারা মাদক ও সামাজিক অন্যায় অপরাধ থেকে দুরে থাকেন। তারা সুঠাম দেহ ও সুস্বাস্থের অধিকারী হয়। খেলাধুলা শারীরিক মানুষিক ও আধ্যাতিক বিকাশেও দারুনভাবে সহযোগীতা করে। খেলাধুলা আমাদের একাগ্রতা ও মনোযোগ বৃদ্ধি করে।
মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করার আহবান জানিয়ে ইউএনও প্রীতম সাহা বলেন, আমরা কেউ যেনো মাদকের দিকে হাত না বাড়াই।
সড়ক নিরাপত্তার উপর গুরত্ব দেওয়ার আহবান জানিয়ে প্রীতম সাহা বলেন, মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কটি চার লেনে উন্নিত হয়েছে। এই সড়কটিতে এখন যানবাহনের সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে গাড়িগুলো দ্রুত গতিতে ছুটছে। আমরা চাইনা দ্রুতগতির কারনে, আমাদের ছেলে বা মেয়ের জীবনে দুর্ঘটনা নেমে আসুক।
তরুণদের উদ্যেশ্যে তিনি বলেন, দ্রুতগতিতে ও বেপরোয়া মটরসাইকেল চালানোর কারনে দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর মিছিল দেখতে পাচ্ছি। এই ধরনের অনাকাংখিত দুর্ঘটনা ও মৃত্যু আমরা প্রত্যাশা করিনা। আমরা চাই সকলেই সুস্থ থাকুক। একটি দুর্ঘটনা, একটি পরিবার বা ব্যাক্তির কান্নার কারন না হয়।