গাংনীর জোড়পুকুরিয়া জেটিএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হামিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ভিক্ষুকের টাকা আত্নসাতের অভিযোগ উঠেছে।
জমি বিক্রির নগদ এক লাখ টাকাসহ অন্ততঃ দুই লাখ টাকার মালামাল আত্মসাত করে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন হাজেরন নেছা নামের এক ভিক্ষুক। টাকা ফেরত পেতে বিভিন্ন মহলের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন লাভ হয়নি।
ভিক্ষুক হাজেরন নেছা জানান, এ উপজেলার ভবানীপুর গ্রাম ছেড়ে বছর দশেক আগে তিনি শিক্ষক হামিদুলের বাড়ি তেরাইল গ্রামে আশ্রয় নেন। সেসময় তাকে একটি ঘর করে দিবেন ও যতদিন বাঁচবেন ততোদিন খাবারসহ যাবতীয় ভার বহন করবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দেন।
সেসময় বৃদ্ধার কাছে থাকা জমি বিক্রির এক লাখ টাকা নিয়ে নেন এবং ১০ বছর যাবত বিভিন্ন গ্রাম থেকে ভিক্ষার টাকা ও ধান চাল বিক্রির যাবতীয় অর্থ হাতিয়ে নেন।
মাস দুয়েক আগে শিক্ষক হামিদুলের স্ত্রী ওই ভিক্ষুকের সাথে অসদাচরণ করেন এবং হামিদুলসহ পরিবারের লোকজন ভিক্ষুককে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। নগদ টাকাসহ দশ বছরের ভিক্ষার টাকা ফেরত চাইলে হামিদুল মারমুখি হন। তাছাড়া বাড়িতে প্রবেশ করতে বাঁধা দেন। ভিক্ষুক হাজেরন অনুনয় বিনয় করে টাকা চাইলেও তা দেয়া হয়নি।
এব্যাপারে বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকগণ হামিদুলের কাছে বিষয়টি জানতে চান এবং এক পর্যায়ে কিছু টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করেন। হামিদুল ওই বৃদ্ধার একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দেয়া ছাড়াও কিছু টাকা ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন এবং এক সপ্তাহ সময় চান। বৃদ্ধা রাজি হবার মাস খানেক পেরিয়ে গেলেও আজও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন নি। ঠাঁই মেলেনি ওই বৃদ্ধার।
স্থানীয় লোকজন জানান, ভিক্ষুক হাজেরন ভিক্ষা করে বিভিন্ন গ্রামে জমা রাখতেন। পরে হামিদুল ভ্যানযোগে তা নিয়ে বিক্রি করতেন। প্রতিদিনের ভিক্ষার টাকা তুলে দিতে হতো হামিদুলের হাতে। হাজেরনের টাকায় নিজের বাড়ি তৈরী করেছেন ওই শিক্ষক। নতুন ঘরে ওঠার সাথে সাথে শিক্ষক হামিদুল বদলে যান এবং ভিক্ষুককে তাড়িয়ে দেন।
বিষয়টি জানার জন্য সাংবাদিকগণ শিক্ষক হামিদুলের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেন নি।
অভিযুক্ত হামিদুল ইসলাম জানান, স্থানীয় একটি গোষ্ঠীর সাথে আমার পূর্ব শত্রুতা থাকায় ওই গোষ্ঠিটি ভিক্ষুককে দিয়ে একটি মিথ্যা গল্প বানিয়েছে।ভিক্ষুক আমার বাড়িতে থাকতো। সে যা ভিক্ষা করে নিয়ে এসেছিল সেটা তার রাখা ডাইরিতে লেখা আছে।ঈদের পর দিন আমার বাড়ি থেকে চলে গেছে সে। পরের দিন তার কিছু চাল ডাল ছিল সেগুলোও নিয়ে গেছে। কয়েক হাজার টাকা আছে সে আসলেই টাকাটা দিয়ে দেবো।এর মধ্যে ওই গোষ্ঠিটি সাংবাদিকদের দিয়ে মিথ্যা গল্প বানিয়ে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। আমি এই মিথ্যা সংবাদের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।