বিভিন্ন পত্রপত্রিকা আর টেলিভিশনে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর গাংনী উপজেলার অন্ধ পরিবারের হাতে আর্থিক সহায়তা তুলে দিলেন গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আর এম সেলিম শাহনেওয়াজ। রবিবার বেলা ১১ টার সময় উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে অন্ধ পরিবারের হাতে নগদ টাকা প্রদান করা হয়। সেই সাথে শীত রিবারনের জন শীতবস্ত্র দেয়া হয় অসহায় এ পরিবারকে।
‘‘পরিবারের ছয় প্রতিবন্ধী নিয়ে অন্ধ গৃহবধু পারেছার জিবন যুদ্ধ’’ এমন সংবাদ প্রচারিত হলে বিভিন্ন সংগঠন ও দানশীল ব্যক্তিরা এই পরিবারের দিকে নজর দিতে শুরু করেন। দৈনিক মেহেরপুর প্রতিদিনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ দেখে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকার এক জনৈক ব্যাক্তি নগদ ১০ হাজার টাকা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে ওই পরিবারের হাতে তুলে দেন।
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শাহিনের স্ত্রী দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পারেছা খাতুন। স্বামি, মানসিক ভারসাম্যহীণ ননদ বৃদ্ধ অন্ধ মা রঙ্গিলা আর দৃষ্টি প্রতিবন্ধী দুই সন্তানকে নিয়ে তার পাঁচ জনের সংসার। স্ত্রী পারেছার চোখের আলো না থাকলেও মনের আলোয় পথ চলা শুরু করে সে।
স্বামি শাহিনকে কামলার কাজে পাঠিয়ে আবার সাথে করে নিয়ে আসে বাড়িতে। বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হওয়ায় শাহিনের মজুরি দেয়া হয় অর্ধেক। এই সামান্য টাকা দিয়ে সংসার চালানো অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হওয়ায় শুরু করে ছাগল ও হাঁস মুরগি পালন। অল্প দিনেই কিছুটা স্বস্তি আসে সংসারে।
বছর খানেক পরে অনেক আশা নিয়ে সন্তান গর্ভে ধারণ করলেও বিধি বাম। পরপর দুটি সন্তান হয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। শুরু হয় তাদের অভিশপ্ত জিবন সংগ্রাম। তবুও হাল ছাড়েনি পারিছা। ভিক্ষাবৃত্তি না করে পরিশ্রম করে খেয়ে না খেয়ে সংসার সংগ্রামে লিপ্ত রয়েছেন। নিজের হাতে সংসারের সব কাজ করতে হয় তাকে। রান্না বান্না, সন্তানদের গোসল করানো খাওয়ানো ছাড়াও সংসারের সব কাজই করেন নিপুণ হাতে।
স্বামি স্ত্রী দুজনই বাঁধাগ্রস্ত হওয়ায় তাদের মাথা গোজার ঠাঁইও ছিল না। স্থানীয় ও প্রবাসী কয়েকজন যুবক কোন রকম থাকার ঘরটি ঠিক করে দিয়েছে। আগামীতে দৃষ্টিহীণ এই দুই সন্তানের কী হবে এটা ভেবে কুল পান না পারেছা। তবুও এগিয়ে যাবার স্বপ্ন।