আশিক,মুস্তাকিন,কুলছুম ও রিয়াজ। চারজনকে শিশু রেখেই দুরারোগ্য ব্যাধীতে মারা যায় তাদের মা। স্ত্রী মারা যাবার পর বাবা রাশিদুল বিয়ে করে সংসার করছে আলাদা।
দ্বিতীয় স্ত্রী পেয়ে সন্তানদের খোজ নেয়া প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন পিতা রাশিদুল। অসহায় চার এতিম শিশুদের দেখা শোনা করে দিনমজুর হতদরিদ্র দাদা লালন মন্ডল ও দাদি ছালমা বেগম।
কিশোর আশিক দাদার বাড়ি কসবা গ্রামে একটি চায়ের দোকান চালিয়ে ছোট ভাইবোনদের খাবার যোগায়। নিজে লেখা পড়া না করতে পারলেও ছোট ভাইবোনদের লেখা পড়া শিখিয়ে মানুষের মত মানুষ করে গড়ে তুলতে। এ নিয়ে কিশোর আশিকের জীবন সংগ্রাম বিষয়ে মেহেরপুর প্রতিদিনে প্রতিবেদন করেন মেহেরপুর প্রতিদিন পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক আকতারুজ্জামান। প্রতিবেদনটি প্রকাশের সাথে সাথে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান ছুটে যান গাংনীর কসবা গ্রামের লালনের বাড়িতে।
ভাঙ্গাচোরা একটি চায়ের দোকানে চা বিক্রি করছে কিশোর আশিক। টিনের বেড়া আর টিনের ছাউনির ঘরেই আশিকের চার ভাইবোনসহ দাদা দাদির বসবাস।
এসব দেখে হতবাক হয়ে পড়েন নির্বাহী অফিসার। আশিকের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। পরে আশিকের দোকানটিকে ব্যাবসার উপযোগী করতে আর্থিক সহযোগীতা করেন। চার জনের থাকার জন্য প্রধানমন্ত্রী দুর্যোগ সহগনীয় ঘরের ব্যাবস্থা করেন তিনি।
মমতাময়ী মায়ের স্নেহ দিতে একটুও কার্পণ্য করেননি নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান।
বুধবার সকালে তাদের ডেকে চার জনের শরীরে নতুন পোশাক পরিয়ে দেন।
নতুন পোশাক পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়ে কোমলমতি চার শিশু।
নতুন পোশাক পরে আশিক,মুস্তাকিন,কুলছুম আর রিয়াজ জানায়, পোশাক পরে মনে হচ্ছিল আমাদের ‘মা’ যেন আমাদের শরীরে পোশাক পরিয়ে দিচ্ছিলেন। মায়ের আদরের কথা মনে নেই।
তবুও পোশাক পেয়ে মনে করছিলাম মা হয়তো আমাদের পোশাক পরিয়ে দাঁড়িয়ে দেখতেন আমাদের চারজনকে কেমন লাগে। আশিকের দাদী আনোয়ারা বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, তোমাদের মা বেচে নেইতো কি হয়েছে সৃষ্টিকর্তা আছেন।
সৃষ্টিকর্তার এমন প্রতিনিধিও আছেন যিনি তোমাদের মায়ের স্নেহ দিচ্ছেন। নতুন পোশাকে নিজের দিকে তাকায় আর রাস্তা হাটে কিশোর আশিকসহ ছোট ভাইবোন। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের এমন মমত্ববোধ আর মানবিক দৃষ্টি দেখে গাংনী বাসি তাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
আরো পড়ৃন-করোনাভাইরাসে মৃতু বেড়ে প্রায় ৫০০