মেহেরপুর গাংনী উপজেলার কসবা গ্রামের চার এতিম শিশু আশিক,মুস্তাকিন,রিয়াজ ও কুলসুম। দুধ খাওয়া শেষ না হতেই দুরারোগ্য ব্যাধী ক্যান্সারে মা মারা যায়। বাবা অন্য মেয়েকে বিয়ে করে আলাদা সংসারে মন দিয়েছে। খোঁজ খবর নেয়না ছেলে মেয়েদের। দিনমজুর দাদা লালন ও দাদি সালমা চাঁর জনকে লালন পালন করছেন। চার জনের মধ্যে বড় আশিক।
বয়স ১০ বছর। দাদার অভাবের সংসারে কিশোর হাল ধরতে বেছে নিয়েছে চায়ের দোকানদারি। চা বিক্রি করে ছোট ভাইবোনদের লেখা পড়ার দায়িত্ব নিয়েছে কিশোর আশিক। আশিকের এই জীবন সংগ্রাম নিয়ে প্রতিবেদন করেন মেহেরপুর প্রতিদিনের নিজস্ব প্রতিবেদক আকতারুজ্জামান।
প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর নানা মহল মানবিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন কিশোর আশিকদের দিকে। মেহেরপুর প্রতিদিনে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করায় বিভিন্ন মহল ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন প্রত্রিকার সম্পাদক,প্রকাশক ও প্রতিবেদককেও। টনক নড়ে স্থানীয় জন-প্রতিনিধিসহ জেলা উপজেলায় কর্মরত সরকারি কর্মকর্তাদেরও।
সদ্য বিদায়ি গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান প্রতিবেদক আকতারুজ্জামানকে সাথে নিয়ে দেখতে যান কিশোর আশিকের জীবন সংগ্রামের বাস্তবতা। মানবিক ভাবে আশিকদের জীবন সংগ্রাম ও ভেঙ্গে পড়া ঝুঁপড়ি ঘর দেখে তিনিও হয়ে ওঠেন । তাৎক্ষনিক ভাবে নিজ তহবিল থেকে নগদ অর্থ সহযোগীতা ও সরকারি অর্থে আশিকদের বাসস্থানের ব্যাবস্থার প্রতিশ্রুতি দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান। মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের সাথে আলাপ করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আখেরুজ্জামানকে নির্দেশনা দেয়া হয় ঘরনির্মাণ কাজের সকল প্রক্রিয়া শেষ করার জন্য। অবশেষে মা,বাবা হারা চার ভাই-বোনদের জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে সরকারি অর্থে দুর্যোগ সহনীয় পাকা ঘর। ঘরের গাথুনির কাজ ইতো মধ্যেই শুরু হয়েছে।
কিশোর আশিক ও তার ভাইবোনদের খুঁশির শেষ নেই। গাংনী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের মাধ্যমে তিন লাখ টাকা ব্যায়ে দুর্যোগ সহনীয় ঘর নির্মাণ কাজ চলছে। তবে কাজের মান ভাল হচ্ছেনা বলে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। তিন লাখ টাকায় অনেক ভাল মানের বাড়ি নির্মাণ সম্ভব বলে ধারনা এলাকাবাসির। স্থানীয়দের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে কাজ দেখতে গিয়ে আশিকদের আনন্দে আনন্দিত মেহেরপুর প্রতিদিন পরিবার। কথা হয় ইউপি চেয়ারম্যান আখেরুজ্জামানের সাথে।
তিনি বলেন, আশিকদের যে ঘর নির্মাণ হচ্ছে তাতে আমিও খুঁশি। তবে কাজটি মানসম্মত করার জন্য কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের বলা হয়েছে। সদ্য বিদায়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান বলেন, আশিকদের বিষয়টি অত্যান্ত মানবিক। আমি তাদের পাশে দাঁড়াতে পেরে আনন্দ পেয়েছি। তবে এ কৃতিত্ব স্থানীয় পত্রিকা মেহেরপুর প্রতিদিন সহ স্থানীয় সাংবাদ কর্মীদেরও।