একটি মামলার কারণে মেহেরপুরের গাংনীর তিনটা গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সংস্কার কাজ বন্ধ রয়েছে শিরোনামে টেলিভিশন ও কয়েকটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর মামলাটি ১ সপ্তাহের মধ্যে নিস্পত্তি করা হবে বলে জানিয়েছে মামলার বাদী জাকা মোল্লা।
সোমবার রাতে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তিনি। চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবনগর উপজেলার বাসিন্দা ঠিকাদার জাকা মোল্লা জানান, এলাকাবাসির দূর্ভোগের কথা চিন্তা করেই আগামী ১সপ্তাহের মধ্যে মামলাটি নিস্পত্তি করা হবে।
তিনি আরো বলেন, ১ বছর পূর্বে গাংনী উপজেলার ৯টি রাস্তার কাজ লটারির মাধ্যমে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করা হয়। মেহেরপুর জেলার কয়েকজন ঠিকাদার ৬টি, কুষ্টিয়ার একজন ২টি ও তিনি ১টি কাজ লটারির মাধ্যমে বিজয়ী হন।
মেহেরপুরের ৬টা কাজের অনুমতি দিলেও মেহেরপুর এলজিইডি অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রহমানের সাজগোজে নানা অজুহাত দেখিয়ে আমাদের বাকী ৩টা টেন্ডার বাতিল করতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত দিলে সেই ৩ টা কাজের টেন্ডার বাতিল হয়। পরে লটারিতে বিজয়ী হওয়ার পর কাজ না দিয়ে টেন্ডার বাতিল করায় তিনি হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের করেন। হাইকোর্টে মামলায় তিনি পক্ষে রায় পেলেও এলজিইডি আবারও আপিল করে। একারনে সড়ক সংস্কার কাজ বন্ধ রয়েছে।
ঐ তিনটা কাজ বন্ধ হওয়ার পিছনে কলকাঠি নেড়েছেন মেহেরপুর এলজিইডি অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রহমান। তবে মামলায় আগামি এক সপ্তাহের মধ্যে নিস্পত্তি করা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আছাদুজ্জামানের সরকারী নম্বরে কল দিলে তিনিও রিসিভ করেননি। এ বিষয়ে জানতে সোমবার সন্ধ্যায় উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনিও রিসিভ করেননি।
বামুন্দী ইউপি চেয়ারম্যান ও মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মো: শহিদুল ইসলাম বিশ্বাস জানান, ভাঙ্গাচোরা রাস্তার কারণে বামুন্দী অঞ্চলের মানুষ চরম দূর্ভোগে পড়েছে। জনগণকে দূর্ভোগ দেওয়ার পিছনে যদি সহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রহমান দায়ি থাকেন তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করছি।
মেহেরপুর ২ গাংনী আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন বলেন, জনগণকে জিম্মি করে কেউ ফায়দা লুটবে তা হতে দেয়া হবেনা। ঠিকাদারকে তিনি দ্রত মামলা নিস্পত্তি করার তাগিদ দিয়েছি। তবে জনগনকে দূর্ভোগ দেওয়ার জন্য যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য : গাংনী উপজেলার বামুন্দী-কাজিপুর, কাজিপুর নওদাপাড়া, আকুবপুর মোহাম্মদপুর হয়ে গোয়াল গ্রাম পর্যন্ত এই সড়কটি ঠিকাদারের মামলার কারনে দীর্ঘ কয়েক বছর সংস্কার কাজ বন্ধ রয়েছে। একযুগেরও বেশি সময় আগে সংস্কার হলেও বর্তমানে ঐ সড়ক গুলো দিয়ে চলাচল কষ্ট সাধ্য হয়েছে পড়েছে।
গাংনী উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে জানা গেছে, ১ বছর পূর্বে বামুন্দী কাজিপুর সড়ক ১ কোটি ৫ লক্ষ, মোহাম্মদপুর-গোয়াল গ্রাম ১ কোটি ১৩ লক্ষ ও নওদাপাড়া-কাজিপুর সড় প্রায় ৩ কোটি টাকার টেন্ডার হয়।
কিন্তু লটারি বিজয়ীদের কাজ না দেওয়ার কারনে মামলা করলে সড়ক সংস্কার কাজ বন্ধ হয়ে যায়। সহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রহমান ১৭/০২/২০৪ সালে মেহেরপুরে যোগদান করেন বলে এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে।
গাংনী প্রতিনিধি