করেনাকালীন মুহূর্তে গ্রামবাসীর চিকিৎসায় এ্যাম্বুলেন্স উপহার দিলেন এক সৌদি প্রবাসী। শুধুমাত্র করোনা রোগীই নয়,যে কোনো রোগী গ্রাম থেকে হাসপাতালে নিতে এলাকার মানুষ বিনামূল্যে ব্যাবহার করবেন প্রবাসীর দেয়া উপহারের এই এ্যাম্বুলেন্স। প্রতিমাসের জ্বালানি ও চালকের বেতনও প্রদান করবেন গ্রামের অন্যান্য বিত্তবানসহ মানবিক ওই প্রবাসী । প্রবাসীর দেয়া এ্যাম্বুলেন্স পেয়ে খুশি এলাকার মানুষ। এমন মানবিক উপহার সংকটকালীন মুহুর্তে মানুষের জীবন বাচাতে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।
মেহেরপুর সদর উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের রাজনগর গ্রামের আবদুল হকের ছেলে আমিনুল ইসলাম (সৌদি প্রবাসী) বৃহস্পতিবার বিকেলে গ্রামের মাতব্বরদের হাতে এ্যাম্বুলেন্স এর চাবি ও এ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর করেন।
এসময় আমিনুল ইসলামের পরিবারের সদস্যসহ গ্রামবাসীরা উপস্থিত ছিলেন। প্রবাসী আমিনুল ইসলাম বলেন, মেহেরপুর থেকে আমাদের গ্রামের দুরুত্ব প্রায় দশ কিলোমিটার। কোনো মানুষ অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে নিতে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। অটোভ্যানে যেতে অনেক সময় লাগে। দ্রত হাসপাতালে না পৌছাতে পেরে অনেক রোগী পথের মধ্যে মৃত্যু হয়। গ্রাম থেকে দুরের কোনো হাসপাতালে যেতে হলে ভাড়াটে মাইক্রো বা সরকারি এ্যাম্বুলেন্স নিতে গুনতে হয় মোটা অংকের টাকা। তাও আবার সঠিক সময়ে পাওয়া মুশকিল। বর্তমানে মেহপরপুর জেলায় করোনা রোগী দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এসময় আমাদের গ্রামের মানুষ যাতে সঠিক সময়ে হাসপাতালে পৌছাতে পারে তায় একটি এ্যাম্বুলেন্স প্রদান করা হলো। আমি গ্রামে বড় হয়েছি।গ্রামের মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে দাড়িয়েছি। আমার এ উপহার অনেক মানুষের জীবন বাঁচাতে সহায়ক হবে।
গ্রামের যুবক মাসুদ রানা বলেন, আমাদের গ্রামের মানুষ আমিনুল ইসলাম বর্তমান সৌদি প্রবাসী। অনেক বছর আগে তিনি সৌদি আরবে গিয়ে এখন সাবলম্বি। তার কাছে আমরা দাবী করলে তিনি এ দুর্যোগ কালীন মুহুর্তে একটি নতুন এ্যাএম্বুলেন্স উপহার দিলেন। তার এ উপহার সময় উপযোগী হিসেবে এলাকার সব মানুষের দুঃসময়ে উপকারে আসবে।
রাজনগর গ্রামের প্রবীণ ইসমাইল হোসেন বলেন, অনেক দরিদ্র মানুষ আছে যারা ভাঁড়ার অভাবে চিকিৎসার। কোনো ব্যাক্তি অসুস্থ হলে জরুরি ভাবে হাসপাতাল যেতে পারেনা। আমিনুলের দেয়া উপহারের এ্যাম্বুলেন্স তারাসহ এলাকার মানুষ দ্রত সময়ের মধ্যে চিকিৎসা পাবে। এ উপহার আমাদের জন্য অনেক বড় উপহার।আমরা তার। দির্ঘায়ু কামনা করি।
বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক ডাঃ সজিব উদ্দিন সাধিন বলেন,,সঠিক সময়ে চিকিৎসা না পেয়ে অনেক মানুষই প্রতিনিয়ত মারা যাচ্ছে, বিশেষ করে স্টোক জনীত। রোগীর ক্ষেত্রে সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রোগী পরিবহনে আমিনুল ইসলাম গ্রামবাসীদর জন্য ভাল একটি কাজ করছেন। যা এলাকার সমস্ত মানুষ বিপদকালীন সময় উপকার ভােগ করবে। এই বিপদকালীন মুহুর্তে দুর থেকে এলাকার প্রতিটি মানুষের পাশে থাকতে পারছেন প্রবাসী আমিনুল ইসলাম। এলাকার প্রতিটি বিত্ত্ববানদের এভাবেই মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিৎ বলেও মন্তব্য করেন এ চিকিৎসক।
পিরোজপুর ইউপি চেয়ারম্যান বাবলু বিশ্বাস বলেন, করোনাকালীন সময়ে কোনো মানুষ অসুখ হলে তাকে হাসপাতালে নিতে খুব কস্টের মধ্যে পড়ছেন তার পরিবার। আমিনুল ইসলাম দুর থেকে সে বিষয়টি উপলদ্ধি করে মহৎ কাজটি করছেন তা অবশ্যই ভালকাজ। প্রতিটি গ্রামে একটি করে এ্যাম্বুলেন্স থাকলে মানুষ উপকৃত হবে।