করোনা ঝড়ের আগে চীনে মোবাইল নম্বরে গ্রাহক সংখ্যা ছিল ১৬০ কোটি। কিন্তু গত দুই মাসে দেশটিতে দুই কোটি ১৪ লাখ গ্রাহক কমে গেছে।
গত বছরের ডিসেম্বর মাসের শেষদিকে চীনের উহানে প্রাণঘাতী নভেল করোনার উৎপত্তি ঘটে। আর চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গ্রাহক কমতে শুরু করে।
চীনের তিনটি মোবাইল ফোন অপারেটরের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ।
ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে চায়না মোবাইল লিমিটেড নামক অপারেটর তাদের ৮০ লাখ গ্রাহক হারিয়েছে। ৭৮ লাখ সিম বন্ধ রয়েছে চীনা ইউনিকম হংকং লিমিটেডের। এবং চীনা টেলিকম করপোরেশন ৫৬ লাখ গ্রাহক হারিয়েছে। অর্থাৎ করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এই দুই মাসে সব মিলিয়ে ২ কোটি ১৪ লাখ গ্রাহক হাওয়া হয়ে গেছে চীনে।
এদিকে দ্রুত বিপুল সংখ্যক গ্রাহক হারিয়ে ফেলে বিপাকে পড়েছে এই তিন মোবাইল ফোন অপারেটর প্রতিষ্ঠান।
এর প্রভাব পড়েছে প্রতিষ্ঠান তিনটির শেয়ার দরে। আন্তর্জাতিক শেয়ারবাজারে এই তিন প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দরপতন ঘটেছে।
প্রতিবেদনে ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, হংকং স্টক এক্সচেঞ্জে চায়না টেলিকম শেয়ারদর হারিয়েছে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ, চায়না মোবাইল লিমিটেড হারিয়েছে ২ দশমিক ৭ শতাংশ এবং চায়না ইউনিকম হংকং লিমিটেড হারিয়েছে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ। অথচ গত বছরেও চীনের এই তিন মোবাইল ওপারেটরের শেয়ারদর ঊর্ধ্বমুখী ছিল।
হঠাৎ করে গ্রাহক কমে যাওয়ার বিষয়ে ব্লুমবার্গকে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার লেনদেনের ব্রোকারেজ হাউস ‘সানফোর্ড সি বার্নস্টেইন অ্যান্ড কোম্পানি’র বিশ্লেষক ক্রিস লেন বলেছেন, ‘করোনাভাইরাসের তাণ্ডবেই এমনটা হওয়া স্বাভাবিক। গত তিন মাসে চীন ছিল অব্রুদ্ধ ও বিচ্ছিন্ন। এই তিন মাসে বহু বিদেশী কর্মীরা নিজের দেশে ফেরত গেছেন। সেখানে পর্যটকের স্থানগুলো ছিল বন্ধ। একেবারেই পর্যটকশুন্য ছিল চীন। যে কারণে বিপুল সংখ্যক গ্রাহক কমে গেছে। দ্বিতীয়ত, চীনের বহু মানুষ এক এলাকা থেকে গিয়ে অন্য এলাকায় কাজ করেন। ওইসব কর্মীদের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে মোবাইল নম্বর দেয়া হয়। করোনাভাইরাসের কারণে অনেকে নিজেদের এলাকায় চলে গেছেন। সেজন্য প্রতিষ্ঠান থেকে দেয়া নম্বরগুলো বর্তমানে বন্ধ আছে। এসব কারণের হঠাতই এতো গ্রাহক হারিয়ে গেছে।’ সূত্র-যুগান্তর