অতিরিক্ত গরমের কারনে চুয়াডাঙ্গায় বাড়ছে ডায়রিয়া। গত ৬ দিনে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শিশুসহ ১১১ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে। এমনকি প্রতিদিন বহির্বিভাগে ১০০ থেকে ১৫০ জন ডায়রিয়া রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ৬ দিনে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শিশুসহ ১১১ জন ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়া প্রতিদিন বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছে ১০০-১৫০ জন ডায়রিয়া রোগী। এর মধ্যে ৭০ শতাংশই বয়স্ক।
চিকিৎসকরা বলছেন, এই গরমে বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবার ও পানীয় গ্রহণ এবং অনিরাপদ পানির কারণে ডায়রিয়া রোগী বাড়ছে। সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, দুটি কক্ষ নিয়ে ডায়রিয়া ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডে কোনো শয্যা খালি নেই। ফলে মেঝেতেই শিশুসহ রোগীদের থাকতে হচ্ছে। জায়গা না থাকায় বাইরের বারান্দার মেঝেতে রোগীদের চিকিৎসা চলছে।
মাহফুজা খানম নামে এক বৃদ্ধা বলেন, হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কোনো জায়গা নেই। আজ তিন দিন ধরে মেঝেতে আমার চিকিৎসা চলছে।
রনি আলম নামে এক যুবক বলেন, দুদিন ধরে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত আমি। রোববার দুপুরে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। ওয়ার্ডে কোনো জায়গা নেই। প্রচণ্ড গরমে বারান্দার মেঝেতেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। হাসপাতাল থেকে সব ধরনের ওষুধ দেওয়া হচ্ছে।
নুরুন্নাহার নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, গতকাল বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে ফুচকা খেয়েছিলাম। সন্ধ্যা থেকেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। প্রচুর গরম লাগছে। হাসপাতালের ফ্যান ধীরে ধীরে ঘোরার কারণে বাতাস গায়ে লাগছে না।
ডায়রিয়া ওয়ার্ডের দায়িত্বরত নার্সরা জানান, এই কয়েক দিনে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই বয়স্ক। শিশু রোগী কম আছে। খুব বেশি একটা চাপ নেই। এমন হতে থাকলে সামলাতে হিমশিম খেতে হবে আমাদের।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মাহাবুবুর রহমান মিলন বলেন, অতিরিক্ত গরমের কারণে কয়েক দিন ধরে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। মূলত এই গরমে অস্বাস্থ্যকর খাবার ও পানীয়, অনিরাপদ পানি পান করায় এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে।
বাইরের খাবার ও বাসি খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। শিশুরা বাইরের খাবার বেশি খায়। এসব খাবারে ধুলাবালি থেকে যায়। গরমে খাবার, বিশেষ করে ফাস্টফুড পচে যায়। এছাড়া অনিরাপদ পানি পানের জন্যও ডায়রিয়া হচ্ছে।
ডায়রিয়া থেকে বাঁচতে হলে নিরাপদ পানি পান করা সবচেয়ে জরুরি। বাইরের খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।