মার্কিন প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান ওপেনএআইয়ের তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত চ্যাটবট চ্যাটজিপিটির দেওয়া স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শ নির্ভুল নয়। আর তাই স্বাস্থ্য পরামর্শ জানতে চ্যাটজিপিটি ব্যবহারে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ড স্কুল অব মেডিসিনের একদল গবেষক। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়টির একদল গবেষক চ্যাটজিপিটির কাছে স্তন ক্যানসার রোগ সম্পর্কে জানতে ২৫টি প্রশ্ন করেন। ৮৮ শতাংশ প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিলেও সেগুলো বিস্তারিতভাবে জানাতে পারেনি চ্যাটজিপিটি। শুধু তা–ই নয়, প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য পুরোনো তথ্যও ব্যবহার করেছে। আর তাই স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শ জানতে চ্যাটজিপিটি ব্যবহারে সবাইকে সতর্ক করেছেন তাঁরা।
রেডিওলজি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রের তথ্য অনুযায়ী, একই প্রশ্নের একাধিক উত্তর দিয়েছে চ্যাটজিপিটি। অর্থাৎ, একই প্রশ্ন একাধিকবার করা হলে ভিন্ন উত্তর পাওয়া যায়। আর তাই চ্যাটজিপিটির কার্যকারিতা পরখ করতে, স্তন ক্যানসারবিষয়ক একই প্রশ্ন তিনবার করেন গবেষকেরা। এরপর চ্যাটজিপিটির দেওয়া উত্তর ম্যামোগ্রাফিতে দক্ষ তিনজন রেডিওলজিস্ট বিশ্লেষণ করেন। এতে দেখা যায়, উত্তরের ৮৮ ভাগ সঠিক এবং খুব সহজে সেগুলো বোঝাও যায়। তবে কিছু উত্তর সঠিক ছিল না, এমনকি কাল্পনিক ছিল বলে সতর্ক করেন তাঁরা। ফলে চ্যাটবটের দেওয়া উত্তর জেনে রোগীরা বিভ্রান্ত হতে পারেন।
গবেষকদের অন্যতম সদস্য ডা. পল ই বলেছেন, ‘স্তন ক্যানসারের লক্ষণ, কারা ঝুঁকিতে রয়েছেন, চিকিৎসা খরচ, বয়স ও ম্যামোগ্রামের তথ্য সঠিকভাবে দিয়েছে চ্যাটজিপিটি। তবে অন্যান্য প্রশ্নের ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটি বেশ কিছু ভুয়া জার্নাল বা হেলথ কনসোর্টিয়ামের নিবন্ধের সূত্র উল্লেখ করে ভুল উত্তর দিয়েছে। আর তাই স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শ পেতে চ্যাটজিপিটির বদলে চিকিৎসকদের ওপরই নির্ভর করা উচিত।’
গত বছরের নভেম্বরে প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের অর্থায়নে ওপেনএআই চ্যাটজিপিটি উন্মুক্ত করার পর প্রযুক্তি দুনিয়ায় ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয়। বর্তমানে লাখ লাখ ব্যবহারকারী প্রতিদিন এই প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন। মাইক্রোসফটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিজেদের বিভিন্ন সেবায় চ্যাটজিপিটি যুক্ত করেছে। তবে চ্যাটজিপিটির নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান স্বীকার করেছে, চ্যাটজিপিটি সব সময় সঠিক উত্তর নাও দিতে পারে।
সূত্র: ডেইলি মেইল