মায়ের অকৃত্রিম ভালোবাসা ও স্নেহের সঙ্গে অন্য কোনো সম্পর্কের তুলনা হয় না। তেমনই এক মা সুখিরন নেছা (৭৫)। যিনি সন্তানের জন্য ৪৪ বছর রোজা পালন করেছেন। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি ছেলের জন্য রোজা পালন করবেন বলে জানিয়েছেন।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাজার গোপালপুর গ্রামের মৃত আবুল খায়েরের স্ত্রী সুখিরন নেছা। তাঁর তিন ছেলে, তিন মেয়ে। সুখিরন নেছা বলেন, তাঁর বড় ছেলে শহিদুল ইসলাম হারিয়ে যান। এ সময় তিনি মনে মনে সিদ্ধান্ত নেন, ছেলেকে ফিরে পেলে আজীবন রোজা রাখবেন। পরে ছেলেকে ফিরে পান, তাই তিনি গত ৪৪টি বছর রোজা রাখছেন।
সুখিরন নেছা বলেন, ১৯৭৫ সালে তাঁর বড় ছেলে শহিদুল ইসলাম মাত্র ১১ বছর বয়সে হারিয়ে যান। ওই দিন সকালে ছেলে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। একসময় তিনি পাগলের মতো হয়ে যান। মনে মনে সিদ্ধান্ত নেন, ছেলে বাড়ি ফিরলে আজীবন রোজা থাকবেন। এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার চার দিন পর ছেলে শহিদুল বাড়ি ফিরে আসেন। এরপর থেকে তিনি রোজা রাখছেন।
সুখিরন নেছা আরও বলেন, মনে মনে রোজা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর হঠাৎ একদিন ছেলে বাড়িতে ফিরে মা বলে ডাক দেন। হারানো ছেলেকে বুকে পেয়ে শান্তি পান তিনি। এরপর থেকেই তাঁর রোজা রাখা। মা সুখিরন নেছা বলেন, এই রোজা রাখতে তাঁর কোনো কষ্ট হয় না। তবে বর্তমানে বয়সের কারণে কিছুটা কষ্ট বেড়েছে। এরপরও তিনি মৃত্যুর পূর্ব দিন পর্যন্ত রোজা থাকতে চান।
সেই সন্তান শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার জন্য মা কষ্ট করে রোজা রাখেন। নিষেধ করলেও তিনি শোনেন না। এই রোজা রাখার ইচ্ছা ব্যক্ত করেই মা আমাকে ফিরে পেয়েছে।’
মধুহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুয়েল আহমেদ বলেন, ‘সুখিরন নেছা মা কাকে বলে তা আমাদের দেখিয়ে দিয়েছেন।