চুয়াডাঙ্গা জেলার ১০ রেলস্টেশনের মধ্যে একে একে ৫টিকে বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। জনবল সংকটসহ নানা কারণে এগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ফলে এসব এলাকার জনগণকে নানা দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে রেলওয়ের মূল্যবান সম্পদ। চুরি যাচ্ছে সংরক্ষণের অভাবে। এলাকাবাসীর দাবী, রেলের গৌরব ফেরাতে আবারও পুনরুজ্জীবিত করা হোক বন্ধ স্টেশনগুলো।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ব্রিটিশ শাসনামলে দেশের প্রথম রেলপথ স্থাপন করা হয় চুয়াডাঙ্গায়। এ পথে জেলার মধ্যে রয়েছে ১০টি রেলস্টেশন। জনবল সংকটসহ নানা কারণে প্রায় দেড় দশক আগে থেকে বন্ধ ঘোষণা শুরু হয় জেলার এক-একটি রেলস্টেশন। বছর খানেক আগে যার সর্বশেষ প্রভাব পড়ে জেলার সর্ববৃহৎ উপজেলা শহর এবং দেশের একমাত্র দ্বিতল রেলস্টেশন আলমডাঙ্গায়। বর্তমানে জেলার আলমডাঙ্গা, মুন্সিগঞ্জ, মোমিনপুর, জয়রামপুর ও আনসারবাড়িয়া স্টেশন বন্ধ রয়েছে।
স্ব স্ব স্টেশন ঘুরে জানা যায়, জেলায় বন্ধ হয়ে যাওয়া স্টেশনগুলোর প্রতিটিতে অন্তত তিনজন স্টেশন মাস্টার, তিনজন পোর্টার, তিনজন পয়েজম্যান ও তিনজন গেটম্যান থাকা দরকার। কিন্তু মোমিনপুর স্টেশন ছাড়া এসব স্টেশনের কোনটিতেই মাস্টার নেই। বাকীগুলো চলছে এক-দু’জন গেটম্যান কিম্বা পোর্টার দিয়ে। অন্য পদগুলো বিভিন্ন সময়ে খালী হয়ে পড়ায় কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে এসব স্টেশন বন্ধ করে দেয়।
আসনারবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা খান তারিক মাহমুদ জানান, তাদের স্টেশনটি জেলার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। রাজস্ব আদায় হয় উল্লেখযোগ্য। প্রায় ১৪ বছর আগে থেকে স্টেশনটি জনবল সংকটে পড়ে।
মুন্সিগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা দেবেন্দ্রনাথ বাবুলাল জানান, এ স্টেশন দিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষের পাশাপাশি কৃষক, শিক্ষার্থী, অসুস্থ মানুষেরা নানা প্রয়োজনে বড় শহরগুলোতে যাতায়াত করেন। কিন্তু রেলস্টেশন বন্ধ ঘোষণার কারণে এলাকাবাসী মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছে।
আলমডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার হামিদুল ইসলাম আজম বলেন, এলাকাবাসী রেল ভ্রমণের সময় রেলসংক্রান্ত কোন তথ্য জানতে চাইলে জেলার বন্ধ স্টেশনগুলোতে সে সুবিধা পান না। রেলে অবস্থান জানতে পারেন না।
এলাকাবাসী জানান, বন্ধ স্টেশনগুলো আবারও চালু করা গেলে একদিকে যেমন রেলওয়ের রাজস্ব বাড়তো। অন্যদিকে এসব এলাকার অর্থনীতিতেও পরিবর্তন আসতো। সমৃদ্ধ হতো এলাকার ব্যবসা বাণিজ্য।
চুয়াডাঙ্গার স্টেশন মাস্টার মো: মিজানুর রহমান জানান, জনবল সংকটের কারণে শুধু চুয়াডাঙ্গায় নয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে একের পর এক রেলস্টেশন বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছে কর্তৃপক্ষ। তবে স্বল্প জনবল নিয়ে স্টেশনগুলো সঠিক সেবা দেয়ার চেষ্টা তারা করছেন। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ অচিরেই ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।
মেপ্র/আরপি