২০১৪ সালে মেহেরপুরে জামায়াত নেতা তারিক মো: সাইফুল ইসলামকে কথিত বন্ধুকযুদ্ধের নামে হত্যার ঘটনায় সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, তৎকালীন পুলিশ সুপার একে এম নাহিদুল ইসলামসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আজ সোমবার মেহেরপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট শারমিন নাহারের আদালতের জামায়াত নেতা তারিক মো: সাইফুল ইসলামের ভাই তাওফিকুল ইসলাম বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। মামলাটি আমলে নিয়ে আদালত সদর থানাকে এফআইআরের নির্দেশ দেন।
মামলায় ১৯ জনের মধ্যে চার জন্য রাজনৈতিক নেতা ও বাকি ১৫ জন পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও প্রশাসনের কর্মকর্তা রয়েছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন তৎকালীন এ এস পি মোস্তাফিজুর রহমান, এ এস পি আব্দুল জলিল, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সাঈদ মোমিন মজুমদার, সদর এসি ল্যাণ্ড ফরিদ হোসেন, গাংনী র্যাব ক্যাম্পের কামণ্ডার ক্যাপটেন আশরাফ হোসেন, ডিএডি জাহাঙ্গীর আলম, বুড়িপোতা বিজিবি ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার আসাদ মিয়া, ওসি ডিবি বাবুল আক্তার, সদর থানার ওসি রিয়াজুল ইসলাম, ওসি তদন্ত তরিকুল ইসলাম, এ এস আই আব্দুল হান্নান, কনস্টেবল সাধন কুমার, নারদ কুমার, ডিবির কনস্টেবল জিল্লুর রহমান, সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রসুল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক বারিকুল ইসলাম লিজন, সাবেক ইউপি সদস্য দরুদ আলী।
মামলার এজাহারে জানা গেছে, ২০১৪ সালে তারিক মোঃ সাইফুল ইসলাম বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মেহেরপুর জেলার সহকারী সেক্রেটারী ছিলেন। পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দীতা করার সম্ভাবনা থাকায় ভিন্ন মতের নেতৃত্বকে সমূলে বিনাশের লক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য আসামীরা পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে।
২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি দুপুরে ব্যক্তিগত কাজে তারিক মোঃ সাইফুল ইসলাম মেহেরপুর শহরের হোটেল বাজার ইসলামি ব্যাংকের কাছে গেলে আসামি বারিকুল ইসলাম লিজন ও দরুদ আলী সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম রসুলকে জানায়।
সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সুপারিশে তৎকালীন পুলিশ সুপার কে এম নাহিদুল ইসলামের নির্দেশে মামলার অন্যান্য আসামিরা তারিককে আটক করে। তাৎক্ষনিক সাংবাদিকরা জানতে পেরে পুলিশ সুপারের কাছে বিষয়টি নিশ্চিত হলেও তারিকের স্ত্রী স্বামীর সন্ধানে পুলিশ সুপারের কাযার্লয়ে গেলে পুলিশ সুপার আটকের বিষয়ে অস্বীকার করেন। আটকের পর গোপনস্থানে রেখে তারিককে শারিরীক ও মানসিক নিযার্তন করে আসামিরা।
পরে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে শহরতলী বামনপাড়া শ্বশান ঘাট এলাকায় কথিত বন্ধুকযুদ্ধের নামে একাধিক গুলি করে তাকে হত্যা করা হয়। পরদিন সকালে মেহেরপুর মর্গে থেকে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করে পুলিশ তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পরিবারের কাছে দেওয়া হয়নি এমনকি মামলা না করার জন্য বিভিন্ন ধরণের ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়া হয় এবং দ্রুত লাশ দাফনের নির্দেশ দেওয়া হয়।
চলতি বছরের ৫ই আগষ্ট গণঅভ্যুত্থানের পর দেশে ন্যায় বিচারের পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় বাদি ন্যায় বিচারের লক্ষে আদালতে মামলা দায়ের করেন।