কুষ্টিয়ার সদর উপজেলায় নববধূকে ঝাড়ফুঁকের নামে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে সিরাজুল ইসলাম (৪৪) নামে এক কবিরাজের বিরুদ্ধে। সোমবার (৪ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে উপজেলার আব্দালপুর ইউনিয়নের চৌড়পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এই ঘটনায় কবিরাজের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী ওই নববধূ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান রতন। অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম আব্দালপুর ইউনিয়নের চৌড়পাড়া গ্রামের মৃত আজিবর আলীর ছেলে।
ভুক্তভোগী পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ৫ মাস পূর্বে ঝিনাইদহের জেলার হরিণাকুণ্ডু উপজেলার সোহাগপুর গ্রামের ১৬ বছরের কিশোরীর সঙ্গে একই থানার শিমুল নামে এক যুবকের বিয়ে হয়। বিয়ের পরদিন থেকেই ওই কিশোরীর মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। সেই মানসিক সমস্যা সমাধানে ভৌতিক কারণ দেখিয়ে নববধূকে তার বোনের শ্বশুরবাড়ির এলাকায় ওই কবিরাজ সিরাজুল ইসলামের কাছে চিকিৎসা করানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
চিকিৎসার নামে একটানা ১৪ দিন এশার নামাজের পর একটি মোমবাতি জ্বালিয়ে সেটি না নেভা পর্যন্ত তাকে তার বিশেষ চিকিৎসাগৃহে ঝাড়ফুঁকের (চিকিৎসা) নামে নববধূর শ্লীলতাহানি করে আসছিল। অবশেষে ৪ জানুয়ারি রাত ৮টার দিকে কবিরাজ সিরাজুল ইসলাম তার বোনকে লবণ আনতে পাঠিয়ে ধর্ষণ করে ওই নববধূকে।
ঘটনার আধাঘণ্টা পর তার বোন লবণ নিয়ে আসলে ওই নববধূকে কান্নারত অবস্থায় দেখতে পান। সেখান থেকে তার বোন কান্নার কারণ জানতে চাইলে তাকে কোনো কিছু না বলে তার সঙ্গে বাড়িতে চলে আসেন। রাতে ওই নববধূ তার বোনকে বিষয়টি খুলে বলেন। এই ধর্ষণের বিষয়টি কাউকে কিছু বললে কবিরাজির মাধ্যমে তাকে মেরে ফেলবেন বলে হুমকি দেয় কবিরাজ সিরাজুল।
বিষয়টি রাতারাতি ছড়িয়ে পড়লে আত্মরক্ষার্থে গা ঢাকা দেন সিরাজুল ইসলাম। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ইবি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নববধূকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইবি থানায় নিয়ে আসেন।
এদিকে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তার ভাই জগত ডাক্তার বিভিন্ন রাজনৈতিক ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের মাধ্যমে ভুক্তভোগী পরিবারের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভণ্ড কবিরাজ সিরাজুল ইসলামের কঠোর শাস্তি দাবি করেন এলাকাবাসী।
ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান রতন বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের অভিযোগ পেয়েছি। ভুক্তভোগী ওই নববধূ বাদী হয়ে থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন। ওই নববধূর মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয়েছে। রিপোর্ট আসলেই ঘটনার সত্যতা জানা যাবে। অভিযুক্ত আসামিকে আটকের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।