চিকিৎসকের ভুল অপারেশনে ঝিনাইদহে প্রাইভেট ক্লিনিকে রিফাত (১৬) নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। আবার সেই রোগীকে রাজশাহী মেডিকেলে পাঠোনো হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে তার স্বজনরা।
গত শুক্রবার (৪ অক্টোবর) ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুর এলাকার ঢাকা ল্যাব নামে একটি ক্লিনিকে অ্যাপেন্ডিক্স অপারেশনের পর তার মৃত্যু ঘটে। রিফাত হরিণাকুণ্ডু উপজেলার দরিবিন্নি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র এবং একই উপজেলার সড়াবাড়িয়া গ্রামের বাদশা মুন্সির ছেলে। অভিযোগ উঠেছে, মৃত্যুর পরে রিফাতের নিথর দেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ নিয়ে রিফাতের স্বজনরা ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, অ্যাপেন্ডিক্সের ব্যাথা নিয়ে গত (৪ অক্টোবর) শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে রিফাত ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুর এলাকার ঢাকা ল্যাব নামে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি হয়। ভর্তির পর তার পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসক ডাঃ রেজা সেকেন্দার রিফাতের অপারেশন করেন। অপারেশনের কিছুক্ষন পর রোগীর খিঁচুনি শুরু হয় এবং মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এদিকে পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে স্বজনদের সান্তনা দিতে মৃত রোগীকে ডাঃ রেজা সেকেন্দার প্রথমে কুষ্টিয়া ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে পরামর্শ দেন। রাজশাহী নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা জানান তিনঘন্টা আগেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
ক্লিনিকের একটি সূত্র জানায়, অজ্ঞানের চিকিৎসক ডাঃ অপূর্ব রিফাতকে অজ্ঞানের পর তার কার্ডিয়াক ফেল করে এবং মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। রিফাতের পিতা বাদশা মুন্সি শনিবার রাতে জানান, তার ছেলে অপচিকিৎসার শিকার হয়েছেন। তিনি এর বিচার চান।
এলাকার ইউপি মেম্বর আল আমিন জানান, রিফাত এবার এসএসসি পরীক্ষা দিত। কিন্তু অত্যন্ত ভদ্র নম্র এই ছিলেটি ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার বলি হয়েছেন। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের কসাই খ্যাত চিকিৎসক রেজা সেকেন্দারের বক্তব্য জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ঢাকা ল্যাবের ম্যানেজার আসিফ মিয়া ও মালিক আশরাফুজ্জামান লিপনসহ সবাই এ ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডাঃ শুভ্রা রানী দেবনাথ জানান, স্কুল ছাত্র রিফাতের মৃত্যুর সংবাদ শুনার পর ওই ক্লিনিকটি বন্ধ করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তিনি আরও বলেন, বেশির ভাগ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সমঝোতার ভিত্তিতে ঘটনা মীমাংসা করে ফেলান। তাই শক্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা যায় না। এর আগে একাধিক রোগীর মৃত্যুর পর ডাঃ রেজা সেকেন্দার নিজেই আর অপারেশন করবেন না বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও তিনি একের পর এক অপারেশন করে যাচ্ছেন। এর আগে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের কাছেও ডাঃ রেজা সেকেন্দার আর অপারেশন করবেন না বলে মুচলেকা দিয়েছিলেন বলে সিভিল সার্জন জানান।