সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তালিকা প্রণয়নে দুর্নীতি-অনিয়ম ও সরকারি কাজে অবহেলার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ২ নং মধুহাটী ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক আহম্মেদ জুয়েলসহ ৫ জন ইউপি সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ হাতে এসে পৌঁছেছে।
শোকজ নোটিশ অনুযায়ী ১০ ডিসেম্বর এক প্রজ্ঞাপনে মধুহাটী ইউপির চেয়ারম্যান ফারুক আহম্মেদ জুয়েল, ১নং ওয়ার্ডের সদস্য আশরাফুল ইসলাম, ২নং ওয়ার্ডের সদস্য শ্রী শান্তি বিশ্বাস, ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য আঃ মজিদ, ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য গোলাম রসুল এবং ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ রসুলকে জনস্বার্থে সাময়িক বহিষ্কার করে ইউনিয়ন পরিষদ আইন ২০০৯ এর ৪ এর (খ) ও (ছ) ধারা অনুযায়ী কেন চুড়ান্ত ভাবে অপসারণ করা হবেনা জানতে ১০ কার্য দিবসের মধ্যে জেলা প্রশাসক বরাবর কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেছে। শোকজ নোটিশ নং (স্মারক নংঃ ৪৬.০০.৯৩০০.০১৭.৯৯.০০১, ১৬-১৩৫৬)। এর আগে তাদের স্মারক নংঃ ৪৬.০০.৯৩০০.০১৭.৯৯.০০১,১৬-১৩৫৫ প্রজ্ঞাপণে সাময়িক বহিষ্কারাদেশ প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, করোনাকালীন সরকারের ১০ টাকা কেজি খাদ্য বান্ধব কর্মসূচিতে ব্যাপক দুর্নীতি অনিয়ম ধরা পড়ে এই ইউনিয়নে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আহম্মেদ জুয়েল কয়েক জন ইউপি সদস্যদের সাথে যোগসাজশে একই জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে প্রায় ৪০ টি কার্ড করে চাল আত্মসাৎ করে আসছিলেন। এই কর্মসূচিতে প্রায় ৩০০টি কার্ডে এই অনিয়ম ধরা পড়ে। এই বিষয়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকা, অনলাইন গণমাধ্যম, এবং টেলিভিশন চ্যানেলে এই সংবাদ প্রকাশিত হয়। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের একটি তদন্ত দল সরেজমিনে তদন্ত করে দুর্নীতির প্রমাণ পায়। এর আগে এই ইউনিয়নে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ২ ডিলারকে অপসারণ করে জেলা প্রশাসন।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক আরিফ উজ জামানসহ একটি তদন্ত টিম ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক আহম্মেদ জুয়েলসহ ৭ জন ইউপি সদস্যকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠায়। তারই ফলশ্রুতিতে গত ১০ ডিসেম্বর ১৩৫৫ নং স্মারকে জনস্বার্থে ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক আহম্মেদ জুয়েলসহ ৫ ইউপি সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করে প্রজ্ঞাপণ জারি করে। একই সাথে কেন তাদের চূড়ান্ত অপসারণ করা হবেনা জানতে চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করে।
এই পত্রের অনুলিপি ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক, ঝিনাইদহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রোগ্রামারকে সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়ে পাঠানো হয়। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব, মুখ্য সচিবের একান্ত সচিব এবং অতিরিক্ত সচিবের একান্ত সচিবের অনুকূলে অনুিলপি পাঠানো হয়েছে।