ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক এমপি বলেছেন, চারটি মূল স্তম্ভের উপর ডিজিটাল বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী ভিত্তির উপর দাঁড় করাতে পেরেছি। সেই চারটি ভিত্তির প্রথমত বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ মানবসম্পদে তৈরি করা, দ্বিতীয়ত বাংলাদেশের প্রতিটি জনগণের কাছে সুলভ মূল্যে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়া, তৃতীয়ত সরকারের সকল সেবাকে ডিজিটাল মাধ্যমে সুলভ মূল্যে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া এবং চতুর্থ হলো একটি আধুনিক প্রযুক্তি শিল্প গড়ে তোলা। সেই কল্যাণে মানুষ ঘরে বসে সারা দুনিয়া দেখছে।
সোমবার সকালে মেহেরপুর যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর সংলগ্ন শেখ কামাল আইটি ও ইনকিবেশন সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সাল তিনটি বিশেষ কারণে ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। প্রথমত ২০২০- ২১ আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছি, দ্বিতীয়ত স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করছি এবং তৃতীয়ত প্রধানমন্ত্রী একটি শ্রমনির্ভর অর্থনৈতিক দরিদ্র বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা যে রুপকল্প ২০২১ ঘোষনা করেছিলেন আমরা তা বাস্তবায়ন করেছি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে যখন বাংলাদেশের ৪০ শতাংশ ঘরে বিদ্যুৎ ছিল না। যখন বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল মাত্র ৫৬ লাখ। যখন বাংলাদেশের সরকারি সেবা ডিজিটাল প্লাটফর্মে তো দূরের কথা কর্মকর্তাদের ই-মেইল করার সুযোগ ছিল না। বাংলাদেশের গ্রামগুলো অন্ধকারাচ্ছন্ন ছিলো। বাংলাদেশ আধুনিক প্রযুক্তির কোন ছোঁয়া ছিলনা। প্রযুক্তিশিল্প বলতে আমাদের কোনো অস্তিত্ব ছিল না সেই ১২ বছর আগের দরিদ্র বাংলাদেশকে একটি প্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। ডিজিটাল বাংলাদেশের যে মূল অবকাঠামো নির্মাণ করেছেন তরুণ প্রজন্মের অহংকার সজীব ওয়াজেদ জয়।
তিনি আরো বলেন, মহামারী করোনার কারণে যখন শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার পথে তখন এই আইসিটির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের লেখা-পড়ার সুযোগ করে দিয়েছে সরকার। আজ থেকে বারো বছর আগে যখন শিক্ষকরা বিদ্যালয়ের তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে ই-মেলের কথা ভাবতেও পারেনি। বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার পুত্র তথ্য উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয় তার মেধা খাটিয়ে আইসিটির মাধ্যমে ই-মেলসহ সকল ধরণের তথ্য আদান-প্রদান করার ব্যবস্থা করেছেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সদিচ্ছার কারণে বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। আজ যে আইটি ও ইনকিবেশন সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তুরের উদ্বোধন করা হলো সেখানে দেশ-বিদেশের আইসিটি বিশেজ্ঞদের সহযোগিতায় এলাকার বেকার-যুবকরা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ হয়ে উঠবে। এমনকি কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেনেন্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, এসজিপি,পিএসসি, বাংলাদেশ ডিজেল প্লান্ট ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিগ্রেডিয়ার কাজী অনিরুদ্ধ, মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান, পুলিশ সুপার রাফিউল আলম।
ডিজিটাল বাংলাদেশ, আইসিটি বিভাগ ও বাংলাদেশ হাই টেক পার্কের তত্ত্বাবধানে মেহেরপুরে শেখ কামাল আইটি ট্রেণিং ও ইনকিউবেশন সেন্টারের কাজ শুরু হচ্ছে। আগামী বছরের জুনে এর কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।