ড্রাগন চাষ করে আলোর মুখ দেখার অপেক্ষায় রয়েছে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার হাজরাহাটি এলাকার কৃষক মো: আসাদ আলী।
২০১৯ সালের শেষের দিকে দেড় বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে ড্রাগনের চাষ শুরু করেন তিনি। ইতোমধ্যে কয়েকটি গাছে ফুল আসতে শুরু করেছে।
পানের ব্যবসা করতে গিয়ে লোকসান গুনতে হয়েছে বেশ কয়েকবার। এমন সময় ইউটিউব চ্যানেলে ড্রাগন চাষ দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের মাটিতে বিদেশি ফলের চাষ করে সফল হওয়ার স্বপ্নে বিভোর তিনি। ইউটিউব আর এক বন্ধুর পরামর্শে শুরু করেন এই ড্রাগন চাষ।
সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সারিসারি করে খুঁটি (পাথর সিমেন্ট ঢালাই) বেয়ে ড্রাগন গাছ বেড়ে উঠেছে। খুঁটির মাথার উপর আবার চারকোনা আকৃতি রডের বৃত্তাকার করে টায়ার দিয়ে ঘেরা। একেকটা খুঁটির চারপাশে চারটি করে ড্রাগনের গাছ লাগানো আছে। সেগুলোই ধীরে ধীরে বেড়ে উঠেছে।
ড্রাগন বাগানে পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক আসাদ। তার ড্রাগন বাগানে দেড় বিঘা জমিতে ২২৫ টি খুঁটি রয়েছে। প্রতিটি খুঁটির সাথে ৪-৫ টি চারা রোপণ করা। এখন যত্ন শেষে গাছগুলো খুঁটি পর্যন্ত উঠে গেছে। সাত ফিট এই খুঁটি মাটিতে দুই ফিট দেওয়া (পোঁতা) আছে।
লাগানোর পর থেকে নিজেই শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। আর এই কাজে সহযোগিতা করেন স্ত্রী ও সন্তান।
কৃষক মো: আসাদ আলী জানান, ইউটিউব চ্যানেলে ড্রাগন চাষ দেখে আমি উদ্বুদ্ধ হই। এরপর ঝিনাইদহের এক বন্ধুর পরামর্শে সেখানকার ড্রাগন বাগান ঘুরে ঘুরে জ্ঞান লাভ করি। আবার সেখান থেকেই চারা কিনে শুরু করি বাগান।
ইতোমধ্যে দুই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এছাড়াও আমি প্রতিনিয়ত শ্রম দিয়ে যাচ্ছি। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ড্রাগন বিক্রি হবে বলে আশা করছি। আমার এই বাগানে জৈব সার বেশি লাগে। রাসায়নিক সার কম লাগে।
তিনি জানান, আমাকে এই বাগান করতে কৃষি অফিসসহ স্থানীয় সেতু এনজিওর নির্বাহী পরিচালক সহযোগিতা করেছেন।
উপসহকারী কৃষি অফিসার মাহিরুল ইসলাম জানান, এই ফল চাষ করতে জৈব সার একটু বেশি লাগে। রাসায়নিক সার কম লাগে। আমরা তাঁকে ভার্মি কম্পোস্ট করতে সহায়তা করবো। এছাড়াও প্রতিনিয়ত তাঁর বাগানে গিয়ে পরামর্শ প্রদান করি। অধিক লাভ হয় বলে অনেকেই এই ফল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
মিরপুর উপজেলা কৃষি অফিসার রমেশ চন্দ্র ঘোষ জানান, ড্রাগন একটি পুষ্টিকর ফল। এ ফলে রয়েছে অধিক পরিমাণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। কৃষক আসাদ আলী পরীক্ষামূলকভাবে দেড় বিঘা জমিতে ২২৫ টি খুঁটি করে ড্রাগনের চাষ করে সফলতা পেতে শুরু করেছে।
কৃষক আসাদ আলীর এই ড্রাগন ফলের চাষে সহায়তা হিসেবে ওয়াটার পাম্প, পাইপসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদী প্রদান করেছি।