ভারতের মুম্বাইয়ে শিল্পপতিদের সামনে মমতা শোনালেন নিজের রাজনৈতিক উত্থানের গল্প। জানালেন ‘তৃণমূলই প্রকৃত কংগ্রেস’ বলে প্রচার চালানোর কারণ।
বুধবার মুম্বাইয়ের বিশিষ্টজন, পরে শিল্পপতিদের সামনে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূলের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
এ সময় তিনি রাহুল গান্ধীর নাম উল্লেখ না করে তীব্র সমালোচনা করেন। একই সঙ্গে প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেস ও তার কর্মপন্থা নিয়ে।
মমতা বলেন, কেউ যদি বিদেশে গিয়ে বসে থাকেন, রাস্তায় নেমে লড়াই না করেন, তা হলে বাকিরা কেন বিজেপির ‘টিআরপি’ বাড়তে দেবেন?
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস বাম সরকারের বিরুদ্ধে ঠিকমতো লড়াই করছিল না বলেই তিনি তৃণমূল তৈরি করেছিলেন। এবং মানুষকে বলেছিলেন, তৃণমূলই প্রকৃত কংগ্রেস। কাউকে তো বেড়ালের গলায় ঘন্টি বাঁধতে হবে।
রাহুলের নাম উল্লেখ না করে মমতা বলেন, আপনি যদি বেশির ভাগ সময় বিদেশে বসে থাকেন, মাঝে মাঝে মাঠে নামেন, তা হলে আপনি কি ভাবেন, মানুষ বোকা?
শরদ পওয়ারের পাশে দাঁড়িয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, শরদ পওয়ার বলেছেন, মজবুত বিকল্প শক্তি দরকার। যারা লড়াই করবে। কেউ যদি লড়াই না করে আমরা কি করব?
মুম্বাইয়ে বিশিষ্টজন ও শিল্পপতিরা তৃণমূলনেত্রীকে প্রশ্ন করেছেন, তিনি কি কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিকল্প জোটের কথা ভাবছেন?
জবাবে মমতা বলেন, গত ৬-৭ বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করছি। কংগ্রেস যেখানে বিজেপির বিরুদ্ধে ঠিকমতো লড়াই করছে না, সেখানেই তৃণমূল বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে যাচ্ছে। যেমন— ত্রিপুরা, গোয়া, মেঘালয়। গোয়ায় গত নির্বাচনে মানুষ কংগ্রেসকে ভোট দিলেও কংগ্রেস সরকার গড়তে পারেনি। বিজেপি সরকার তৈরি করেছে।
কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব নিয়ে তৃণমূলনেত্রীর জবাব, আমি করিনি। ওরা যেখানে শক্তিশালী, সেখানে লড়াই করুন। আমি কোথাও ভোট ভাগ করতে যাচ্ছি না।
মমতার যুক্তি, উত্তরপ্রদেশে অখিলেশ যাদব বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করছেন বলেই তৃণমূল সেখানে ভোট ভাগাভাগি করতে যাচ্ছে না। কংগ্রেস কেন আমাদের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গে লড়ছে? সিপিএম কেন লড়ছে? ওরা তো পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল।
প্রসঙ্গত, মহারাষ্ট্রে শিবসেনা, এনসিপি, কংগ্রেসের জোট ক্ষমতায়। সেই জোটের সূত্রধর শরদ পওয়ারের পাশে দাঁড়িয়ে মমতা ইউএপি-র অস্তিত্বই নেই বলে মন্তব্য করায় রাজ্যের কংগ্রেস নেতারা অস্বস্তিতে পড়েছেন।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নানা পাটোল বলেন, বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে অহঙ্কার নয়, ঐক্য প্রয়োজন।