দর্শনা পৌরসভার আলোচিত হিসাবরক্ষক সৈয়দ রুমি ওরফে পলাশ চেক জালিয়াতির অর্থ ফেরত দিয়ে আবারও যোগদান করেছেন।
চেক জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাৎকৃত অর্থ ফেরত দিয়ে গত বুধবার পদ অবনমনের পর ক্যাশিয়ার পদে যোগদান করেছেন। ইতপূর্বে বছরের পর বছর পৌরসভার ট্যাক্স অর্থ আত্মসাৎ ব্যাংক চেকে মেয়র ও প্রকৌশলীর স্বাক্ষর জাল করে টাকা উত্তোলন, আদায়কৃত অর্থ ব্যাংকে জমা না দিয়ে ব্যাক্তিগত ব্যাবসায় খাটানো সহ তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ওঠায় গত বছরের ৩০ আগষ্ট তাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।
পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ সমূহ তদন্তের জন্য পৌরসভার উদ্ধতন কর্মকর্তাদের স্বমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কঠোর গোপনীয়তার মাধ্যমে ওই তদন্ত কমিটি তাদের তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলেও তাদের কি ধরনের অভিযোগ প্রমানিত হয়েছে তা বাইরে প্রকাশ করা হয়নি। আবার তদন্ত কমিটির সদস্যরাও মুখ খুলতে চায়নি। তবে তদন্তে প্রমানিত মেয়র ও প্রকৌশলীর সাক্ষর জাল করে আত্মসাৎকৃত ১৭ লাখ ৫২ হাজার টাকা ইতমধ্যই সাবেক এই হিসাব রক্ষক পৌরসভার ফান্ডে ফেরত প্রদান করেছেন বলে একই সুত্র জানিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাগেছে, দর্শনা পৌরসভার ক্যাশিয়ার পদে সৈয়দ রুমি আলম ওরফে পলাশ পৌর চেয়ারম্যান আক্তারুল ইসলামের সময় নিয়োগ প্রাপ্ত হন। পৌরসভার একাউন্টেন মারা গেলে হিসাবরক্ষক পদে আসিন হন তিনি। এরপর আর পিছনে তাকাতে হয়নি তাকে।
অভিযোগ রয়েছে মেয়রগনের সরলতার সুযোগ নিয়ে পৌরসভার কর্মচারীদের দীর্ঘদিন পর্যন্ত বেতন বাকী থাকলেও বেতন ছাড়ায় পৌর কর্মচারী পলাশ বিপুল টাকার মালিক হয়ে যান। গড়ে তোলেন জ্বালানী খড়ি, ইটভাটা সহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। অভিযোগ রয়েছে এসবই ছিলো পৌরসভার টাকা। সময়মত ট্যাক্স সহ অন্যান্য টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে নিজে ব্যবহার করতেন। ফলে কর্মচারীদের বছরের পর বছর বেতন হতো না। সেই সাথে তার জন্য শাপে বর হয় দীর্ঘদিন ধরে পৌর সভার সচিব ও প্রকৌশলীর মত গুরুত্বপূর্ন পদ দুটি বছরের পর বছর খালি থাকা। ফলে তিনি একই সাথে সচিবের দায়িত্ব পালন করায় দেখার কেউ ছিলনা। তার বিরুদ্ধে শুধু পৌরসভার বিভিন্ন ট্যাক্সের টাকায় নয় পৌর কর্মচারীদের ভবিষ্যৎ তহবিলের টাকাও পকটস্থ করার অভিযোগ রয়েছে। এমন কি মারা যাওয়া কর্মচারীদের জন্য দোয়া সাহায্যর টাকাও হতভাগাদের না দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সেই সময় এই সব অভিযোগ নিয়ে দর্শনার মেয়র সহ দায়িত্বশীল লোকজনদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসে। ওই বৈঠকে পলাশকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং সকল দায়িত্ব অন্যদেরকে বুঝিয়ে দিতে বলা হয়। একই সাথে আত্মসাৎকৃত অর্থ ফেরত প্রদান ও বিভিন্ন ব্যক্তির মাধ্যমে একেরপর এক তদবিরের মুখে গত মঙ্গলবার পৌরসভা থেকে তার পদ অবনমন ও সকল সুযোগ সুবিধা বাতিল করে ক্যাশিয়ার পদে ১৪ তম গ্রেডে পদায়ন করে চিঠি ইস্যু করা হয়। এরপ্রেক্ষিতে গত ১৭ নভেম্বর বুধবার আবারো সৈয়দ রুমি আলম ওরফে পলাশ পৌরসভায় যোগদান করেছেন। তবে তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের কি সুরাহা হয়েছে তা জানা যায়নি।
এই দূর্ণিতীর পরেও দর্শনা পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ পদে যোগদান করায় তাকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।