দর্শনার নাস্তিপুর সীমান্তে শরিফুল ইসলাম নামের এক স্বর্ণ চোরাচালানীকে স্বর্ণ সহ আটক করে বিজিবি। স্বর্ণ সহ আসামি আটকের ঘটনায় চোরাচালানীরা সঙ্গবদ্ধ হয়ে দেশীয় ধারালো অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বিজিবির উপর হামলা চালায় চোরাচালানীরা।
এ হামলায় চোরাচালানী মালামাল স্বর্ণ সহ আসামি ছিনিয়ে নেওয়া সহ চোরাকারবারীদের হামলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রক্তাক্ত জখম হয়ে আহত হয় বিজিবির নায়েক আব্দুল হাকিম ও সিপাহী মেহেদী হাসান নামের এক বিজিবি সদস্য। আহত বিজিবি সদস্যদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।গত শুক্রবার (১৪ জুলাই) দুপুর ২ টার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানাধীন পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের নাস্তিপুর গ্রামের কবরস্থানের নিকট এ ঘটনা ঘটে।
আহত বিজিবির নায়েক আব্দুল হাকিম ও সিপাহী মেহেদী হাসান চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ সুলতানপুর সীমান্ত বিওপি ক্যাম্পে কর্মরত রয়েছে। পরে অভিযান চালিয়ে হামলার প্রধান আসামি নবীউল ইসলাম ওরফে নবীনকে (৩৬) আটক করে বিজিবি। আটক নবীন ও চোরাকারবারী শরিফুল উপজেলার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের নাস্তিপুর গ্রামের স্কুলপাড়ার আব্দুল করিম ওরফে করিম মৌলবীর ছেলে। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে হামলাকারী নবীনকে দর্শনা থানায় সোপর্দ করে ৭ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত আরও ৫/৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে বিজিবি। পরে দর্শনা থানা পুলিশ মামলার আসামি নবীনকে
চুয়াডাঙ্গা আদালতে প্রেরণ করেছে।
এলাকাবাসি ও পুলিশ সূত্রে জানাগেছে,গত শুক্রবার বিকাল ২ টার দিকে চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবি ব্যাটেলিয়ানের অধিনস্থ সুলতানপুর সীমান্ত বিওপি ক্যাম্পের বিজিবি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে সীমান্ত দিয়ে স্বর্ণের একটি বড় চালান ভারতে পাচার হবে। এমন
খবরের ভিত্তিতে সুলতানপুর সীমান্ত বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার নায়েক সুবেদার দুলাল হকের নেতৃত্বে নায়েক আব্দুল হাকিম ও সিপাহী মেহেদী হাসান সীমান্তের নাস্তিপুর কবরস্থানের সামনের পাকা রাস্তায় অবস্থান নেয়। এসময় পারকৃষ্ণপুর অভিমুখ হতে ১ জন ব্যক্তি স্বর্ণ চোরাচালানের উদ্দেশ্যে মোটরসাইকেলযোগে নাস্তিপুর সীমান্তের দিকে আসে। বিজিবি ওই মোটরসাইকেলের পথ গতিরোধ করে শরিফুল ইসলাম নামের এক চোরাকারবারীকে স্বর্ণসহ আটক করে। আটকের পর দেশীয় ধারালো অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে সজ্জিত নাস্তিপুর গ্রামের
স্কুলপড়ার মৃত আব্দুল করিমের ছেলে নবীউল ইসলাম ওরফে নবীন (৩৫), মৃত আবু বক্করের ছেলে এনামুল হক (২৫), মৃত আব্দুল করিমের ছেলে শরিফুল ইসলাম (৪২), শরিফুল ইসলামের স্ত্রী মিষ্টি খাতুন (২৬), মৃত বদু মিয়ার স্ত্রী সুন্দরী বেগম (৫৫), মৃত আব্দুর করিমের মেয়ে মিম আক্তার (২০), একই ইউনিয়নের ঝাঝাডাঙ্গা গ্রামের আব্দুর রউফের ছেলে সাগর হোসেন (২৫) সহ অজ্ঞাত ৫/৬ জন বিজিবির উপর হামলা চালায়। এতে রক্তাক্ত আহত হয় সুলতানপুর বিজিবি ক্যাম্পের নায়েক আব্দুল হাকিম (৩৪) ও মেহেদী হাসান (২৭)। পরে বিজিবি অভিযান চালিয়ে রবিউল ইসলাম ওরফে নবীনকে আটক করে। রাত সাড়ে ১২ টার দিকে চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সুলতানপুর ক্যাম্পের কমান্ডার নায়েক সুবেদার দুলাল হক বাদী হয়ে দর্শনা থানায় হামলাকারী নবীন সহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে দর্শনা থানায় মামলা দায়ের করে।
এ বিষয়ে দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নাস্তিপুর সীমান্তে স্বর্ণের চোরাচালান আটকের সময় দু’জন বিজিবি সদস্যকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় হামলাকারী নবীন সহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে নারী ও পুরুষ অজ্ঞাত ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছে বিজিবি। আটকৃত আসামি শনিবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা বিজ্ঞ আদালতে চালান করা হয়েছে। অন্যান্য আসামদের ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.কর্নেল সাঈদ মোহাম্মদ জাহিদুর রহমানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।