দর্শনায় মাসুমা জান্নাত মহিলা মাদরাসা এতিম খানা ও বিল্লাহ বেডিং এর তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মাদ্রাসার পরিচালক মুফতি গোলাম কিবরিয়া (৫৫) কে আটক করেছে পুলিশ।
ধর্ষণের শিকার ছাত্রীর ডাক্তারী পরীক্ষা ও বিজ্ঞ আদালতের বিচারকের নিকট জবানবন্দি পেশ করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে। এদিকে অভিযুক্ত মাদরাসার পরিচালক গ্রেফতারকৃত গোলাম কিবরিয়ার দৃষ্টন্তমূলোক শাস্তি ও মাদরাসার সকল কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসি।
জানাগেছে, দর্শনা পৌর এলাকার হল্টস্টেশন তেতুল তলায় ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় মাসুমা জান্নাত মহিলা মাদরাসা এতিম খানা ও বিল্লাহ বেডিং। এর পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন বিতর্কীত এবং আলোচিত মুফতি গোলাম কিবরিয়া, স্ত্রী, জামাতা ও মেয়ে।
অভিযোগে জানা যায়, ওই মাদরাসার তৃতীয় শ্রেণীর একছাত্রীকে সপ্তাহ খানিক আগে ধর্ষণ করেন পরিচালক গোলাম কিবরিয়া। ঘটনা জানাজানি হলে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে এলাকাবাসি পরিচালককে আটক করে। পরে দর্শনা থানা পুলিশের হাতে তুলে দেন।
দর্শনা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম লুৎফুল কবীর বলেন, সকালে ভুক্তভূগী ওই ছাত্রীর বাবা মৌখিকভাবে অভিযোগ করে। এরপরই আমরা অভিযান চালিয়ে মাদরাসার পরিচালক মুফতি গোলাম কিবরিয়াকে আটক করেছি। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে দর্শনা থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই আহম্মেদ বিশ্বাস বলেন, মেয়ের পিতা বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। যার মামলা নং-৬। তারিখ ০৭/০৪/২২। নিপীড়িত শিক্ষার্থীর ডাক্তারী পরীক্ষা এবং বিজ্ঞ আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রিটের বিচারক ধর্ষণের শিকার ছাত্রীর জবান বন্দি রেকর্ড করানো হয়েছে। সেই সাথে ৫ দিনের রিমাণ্ডের আবেদন করা হয়েছে। এদিকে মাদ্রাসার সকল শিক্ষার্থী ও শিক্ষক এবং শিক্ষিকা মাদ্রাসা ত্যাগ করেছে। সন্ধ্যায় বিক্ষিপ্ত জনতা মাদ্রাসার সাইনবোর্ড ভাংচুর করেছে।
দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ এ,এইচ,এম লুৎফুল কবীর জানান, আমাদের সকল কার্যক্রম স¤পন্ন করে আসামীকে আদালতে সোপর্দ করেছি। উল্লেখ, মুফতি গোলাম কিবরিয়া কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলার কুচিয়ামোড় গ্রামের মৃত নজির হোসেনের ছেলে।
দর্শনা জামে মসজিদের ঈমাম থাকা অবস্থায় তিনি নানা বিতর্কের জন্ম দেন। যার কারণে ২০১৬ সালে চাকারী চ্যুত হয়ে মাদরাসা খুলে লেবাসের আড়ালে ধর্ম ব্যবসা শুরু করেন।
এ মাদরাসায় ২০২০ সালের ৪ নভেম্বর কুন্দিপুর গ্রামের দুলালের মেয়ে আফসানা খাতুন দোলা (০৯) মৃত্যু বরণ করে। যার প্রকৃত ঘটনা আজও রহস্যবৃত্ত। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত গোলাম কিবরিয়ার দৃষ্টন্তমূলক শাস্তির দাবি ও মাদরাসার সকল কার্যক্রম বন্ধর দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসি।