দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের লোকনাথপুর সহশিক্ষা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মহান বিজয় দিবস পালনের সময় সকাল ১০ দিকে স্কুলের সামনে ইটভর্তি অবৈধ লাটা হাম্বারের ধাক্কায় স্কুলের নাইটগার্ড আশরাফুল এবং নবম শ্রেণীর ছাত্র সিজান গুরুতর আহত হয়েছে।
গতকাল শনিবার ভোর ৫টার দিকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে সিজানের একটি অপারেশন সম্পূর্ণ হয়েছে এবং আশরাফুল চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।
জানা গেছে, উপজেলার লোকনাথপুর সহশিক্ষা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে গত ১৬ই ডিসেম্বর একই স্কুলের নাইট গার্ড লোকনাথপুর গ্রামের মুংলা মির’র ছেলে আশরাফুল (৩০) এবং নবম শ্রেণীর ছাত্র একই গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে সিজান (১৬) কে ইট ভর্তি অবৈধ লাটা হাম্বা দিয়ে পেছন থেকে দ্রুত গতিতে ধাক্কা দেয় একই গ্রামের রেজাউলের ছেলে সাব্বির (১৮)।
ঘটনাস্থলে দুজন মারাত্মক আহত হয়। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে দ্রুত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সিজানকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে রেফার্ড করেন এবং আশরাফুল চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি আছে বলে জানা যায়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
সরজমিনে গিয়ে এলাকাবাসীর কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, মহান বিজয় দিবসে স্কুল কতৃপক্ষ ছাত্র ছাত্রীদের মাঝে খোরমা বিতরণ করছিল। তখন খুরমা বিতরণে কম হয়ে গেলে ছাত্র ছাত্রীরা হট্টগোল শুরু করে। এরই একপর্যায়ে স্কুল থেকে বেরিয়ে এসে স্কুলের বাইরে গেটে ছাত্র-ছাত্রীরা হট্টগোল শুরু করে, তখন পেছন থেকে ইট ভর্তি অবৈধ লাটা হাম্বা নিয়ে নাবালক অনভিজ্ঞ ড্রাইভার একই স্কুলের ১০ম শ্রেণীর ছাত্র সাব্বির পিছন দিক থেকে সজোরে হট্টগোলের মধ্যে গাড়ি চালিয়ে দেয়। তখন লোকনাথপুর স্কুলের নাইট গার্ড আশরাফুল এবং একই স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র সিজান গুরুতর আহত হয়।
এ বিষয়ে আহত সিজানের দাদি হালিমা বেগম বলেন, ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে আমার নাতি ভর্তি আছে। শনিবার ভোররাতে মাজায় একটা অপারেশন হয়েছে। মাজায় একটা রড দেওয়া হয়েছে। আগামী চার দিন পরে আরও একটা অপারেশন করতে হবে বলে ডাঃ জানান।
এ বিষয়ে লোকনাথপুর গ্রামের মৃত নেন্টু মীর’র ছেলে মহাসিন বলেন, আমার চোখের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। একেবারেই অন অভিজ্ঞ শিশু ড্রাইভার গাড়ি চালাচ্ছিল। আসল ড্রাইভার পাশে বসে ছিল। ব্রেকে পা না দিয়ে এক্সেলেটারে পা দেয়ার কারণে গাড়ির গতি আরো বেড়ে যায়, যার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
আহত সিজানের বড় ভাই একই স্কুলের ১০ম শ্রেণীর ছাত্র নিশান বলেন, ঘটনাটি আমার চোখের সামনেই ঘটেছে। স্কুলে ৬০ কেজি খুরমার বাজেট, কিন্তু ২০ কেজি বিতরণ করা হয়, এসব নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের মাঝে হট্টগোল বাধে। পরে সবাই স্কুলের গেটের বাইরে গিয়ে হট্টগোল শুরু করে। তখন পেছন থেকে ইট ভর্তি অবৈধ লাটা হাম্বা এসে ধাক্কা মারে।
এ বিষয়ে লোকনাথপুর সহ শিক্ষা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সাবেক মেম্বার সেন্টু হোসেন বলেন, শুনেছি স্কুল গেটের সামনে হট্টগোল হচ্ছিল। ওই অবস্থায় পেছন থেকে লাটা হাম্বা ধাক্কা মারলে দুজন গুরুতর আহত হয়, এর মধ্যে একজন স্কুলের নাইটগার্ড এবং আর একজন স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র।
এবিষয়ে লাটাহাম্বা চালক সাব্বিরের পিতা রেজাউল বলেন, রাস্তার উপর ছেলেপেলে হট্টগোল করছিল,আমরা মনে করেছিলাম সবাই সরে যাবে। কিন্তু কেউ রাস্তা থেকে সরেনি। যার কারনে দূর্ঘটনা ঘটে গেছে।
এ বিষয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।