দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নে টিসিবির পণ্য পাচ্ছে না কার্ডধারীরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টায় শুরু হয় টিসিবির পণ্য বিতরণ। কিন্তু যাদের নামে টিসিবির কার্ড আছে তারা পাচ্ছে না পণ্য।
সরজমিনে জানাগেছে হাউলী ইউনিয়ন পরিষদে গতকাল টিসিবির পণ্য বিতরণ করা হয়। বিতরণে কার্ডধারীরা পণ্য না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কার্ড থাকতেও নতুন করে করা হয়েছে টোকন ব্যাবস্থা। টোকন গুলো ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ওয়ার্ডের মেম্বারদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তারা কার্ডধারীদের কাছে টোকন পৌঁছে দেবে এবং সেই টোকনে পণ্য উঠবে। এরকমই ব্যবস্থা করা হয়েছে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে সব কার্ডধারীদের কাছে নতুন টোকন পৌঁছে না দেওয়ার কারণে এমন উদ্ভটতম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ফলে টিসিবির পণ্য পাচ্ছেনা প্রকৃত কার্ডধারীরা।
হাউলী ইউনিয়নে ২২০৬ জনের নামে টিসিবির কার্ড রয়েছে। কিন্তু প্রায় ৩/৪শো গ্রাহক এই পণ্য পায়নি। খোদ হাউলী ইউনিয়ন পরিষদের আয়া হাজেরা খাতুন এর নামে টিসিবির কার্ড থাকা সত্বেও সে টোকন পায়নি। ফলে তার কার্ডে এমাসে সে পণ্য তুলতে পারেনি। এতো গেলো এক জনের কথা। ইউনিয়নে এরকম অসংখ্য মানুষ টিসিবির কার্ড থাকা সত্বেও টোকন পাইনি, ফলে পণ্য তুলতে পারেনি তারা। সব কিছুর অডিও ভিডিও রেকর্ড সংরক্ষণ আছে এই প্রতিবেদকের কাছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জৈনক ব্যক্তি বলেন, শুধুমাত্র নিজেদের স্বার্থে টোকনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাতে যাকে ইচ্ছা তাকে টোকন দেওয়া যায়। যাদের নামে টিসিবির কার্ড নেই মূলত তাদেরকেই টোকন দেওয়া হয়েছে। ফলে বঞ্চিত হচ্ছে টিসিবির প্রকৃত কার্ডধারীরা। একজন ব্যক্তির চার পাঁচটা কার্ডের পণ্য তুলতে দেখা গেছে। এমন অসংখ্য ব্যক্তি একাধিক কার্ডের পণ্য তুলেছেন। এতে কার্ডের সুষমবন্টন হচ্ছে না। ফলে দারিদ্রতা কমছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি মহৎ উদ্যোগ এই টিসিবির পণ্য বিতরণ। কিন্তু সরকারের কোটি কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে সাধারণ মানুষের জন্য টিসিবির প্রকল্পের লক্ষ্য ব্যাহত হচ্ছে। এবিষয়ে অতি দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন।
এবিষয়ে ট্যাগ অফিসার আতিকুর রহমান বলেন, যে টোকন জমা দিচ্ছে তাকে মাল দেওয়া হচ্ছে। আমার মাল বুঝ করে দেওয়ার দায়িত্ব। ইউনিয়নের ২২০৬ জনের টোকনের বিপরিতে মাল দেওয়া হয়েছে।
এবিষয়ে হাউলী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন বলেন, শুনেছি কেউ কেউ নাকি টোকন পায়নি। যার যার ওয়ার্ডের টোকন সেই সেই মেম্বারের কাছে বুঝ করে দেওয়া হয়েছে। আগামীতে যাতে টিসিবির প্রকৃত কার্ডধারীরা শতভাগ পণ্য নিতে পারেন সেই রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এবিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রোকসানা মিতা বলেন, টিসিবির প্রকৃত কার্ডধারীরা যদি পণ্য না পায় তাহলে সরজমিনে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। টিসিবির কার্ড নিয়ে কোনরকম অনিয়ম মেনে নেওয়া হবেনা। সে যেই হোক তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।