দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের বাবু অন্যের গরু নিজের বলে দাবী করে এখন বিপাকে। আজ মঙ্গলবার বেলা ২ টার দিকে উপজেলার ছোট দুধপাতিলায় এঘটনা ঘটে।
সরজমিনে জানাগেছে, দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের ছোটদুধপাতিলা গ্রামের আব্দুল হাকিম এর ছেলে আহসান হাবীব সে একজন গরুর ব্যাপারী। গরু কেনাবেচা করে।
গত সোমবার ডুগডুগি পশুহাট থেকে ৪৮ হাজার টাকায় একটা লালচে রং এর গরুর বাছুর কেনে। কিন্তু উপজেলার জয়রামপুর কলোনী পাড়ার মৃত নূর হোসেনের ছেলে রিপন হোসেন বাবু’র সোমবার দিবাগত রাত ৩ টার পরে যেকোন সময় তার গোয়ালঘর থেকে লালচে রঙের একটি গরুর বাছুর চুরি হয়ে যাই। গরু চুরির বিষয়ে সে একটি জিডিও করে থানায়।
আজ মঙ্গলবার সকালে সে সন্ধান পায় ছোট দুধ পাতিলা গ্রামে একটি লালচে রঙের গরুর বাছুর আছে। সেখানে গিয়ে সে গরুটিকে নিজের বলে দাবি করে। সেখানে ৩ টি গরু ছিলো। হাউলী ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম বাবু’র স্ত্রীকে গরু সনাক্ত করতে বল্লে সে অন্য একটি গরু সনাক্ত করে এবং বাবু আর একটি গরু সনাক্ত করে। স্বামী স্ত্রী দুইজন দুইটা গরু সনাক্ত করে। তখনি বাঁধে-বিপত্তি। ঘটনার সংবাদ পেয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং গরুটি উদ্ধার করে হাউলী ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়।
ছোট দুধ পাতিলার গরুর ব্যাপারী আহসান হাবীব গরুটি যার কাছ থেকে কেনা হয়েছে তাকে সন্ধান করে বাছুর গরুটি নিয়ে উপজেলার কুড়ালগাছি ইউনিয়নের সদাবাড়ি গ্রামে গরুর আসল মালিকের বাড়ি যাওয়া হয়। গরুর বাছুর টি ছেড়ে দিলে দৌড়ে তার মা গাভী গরুর কাছে চলে গিয়ে দুধ পান করে। গরুর মালিক এবং স্থানীয় পাড়া-প্রতিবেশী বলেন এই বাছুর গরুটি তারা বিক্রি করেছেন। সেখানে প্রমাণ হয় গরুটি ছোটদুধপাতিলা গ্রামের ব্যাপারী আহসান হাবীব আসলেই কিনেছে। এটা চোরাই গরু নয়। জয়রামপুরের বাবু যে গরুটি নিজের বলে দাবি করছে সে সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন বানোয়াট তথ্য দিয়ে মানুষজন এবং পুলিশকে বিভ্রান্তি করেছে। প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে গরুটিকে নিজের বলে দাবি করে কুক্ষিগত করার চেষ্টা করেছে। এলাকাবাসী দাবি তুলেছে এই প্রতারককে আইনের আওতায় এনে শাস্তি হওয়া উচিত।
এবিষয়ে আহসান হাবীব বলেন, এলাকাবাসী ও পুলিশ কে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। বাবু আমাকে হেনস্থা করেছে। মানুষজনের সামনে আমাকে চোর সাব্যস্ত করার চেষ্টা করেছে। আমি বাবুর নামে দামুড়হুদা মডেল থানায় মান হানীর মামলা করবো। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই। বাবু বলেছে ৮/ ৯ মাস ধরে গরুটি তারা পুষছে। তাহলে তারা নিজের গরু চিনতে পারছে না। তারা ইচ্ছা করেই আমাকে চোর সাব্যস্ত করার চেষ্টা করেছে। আমার গরুটি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। আমি যে গরুটি কিনেছি সেটা একটা বাছুর গরু এখনো সে দুধ খায়।
এবিষয়ে হাউলী ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বলেন, আমার প্রতিবেশী আঃ হাকিম এর ছেলে আহসান হাবীব গত সোমবার ডুগডুগি গরুর হাট থেকে একটি গরুর বাছুর কেনে।
কিন্তুু জয়রামপুরের মৃত: নুর হোসেন এর ছেলে রিপন হোসেন বাবু বাছুর গরুটিকে নিজের বলে দাবি করলে দামুড়হুদা মডেল থানার এস আই তৌহিদ গরুটি আমার হেফাজতে রাখে। তখন আমি আমার প্রতিবেশী কে বলি গরুটি কার কাছ থেকে কেনা হয়েছে তার সন্ধান করো এবং সেখানে চলো। তারপর আমরা বাবু’র ভাই সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সেখানে যায়। কিন্তু বাবু আমাদের সাথে যায়নি। গরুর আসল মালিকের বাড়ি গিয়ে আমরা প্রমাণ করতে সক্ষম হয় গরুটি আসলে চোরাই গরু নয়। গরুটি আসলেই ক্রয়কৃত গরু। বাবু আমাদের মিথ্যা বলেছে। আসলে গরুর বাছুর টি বাবুর নয়। তবে এটাও সত্যি যে বাবুর একটি গরু হারিয়ে গেছে। কিন্তু এই গরুটি তার নয়।
দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আলমগীর কবির বলেন,যার গরু তার সত্যতা পাওয়া গেছে।একজনের গরু যদি অন্য একজন যদি মিথ্যাভাবে দাবি করে তাহলে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।